Reading Time: 4 minutes

বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় বাড়ি কিনবো, এই কথাটি ভাবতেই আমরা যেন অনেক চিন্তায় পড়ে যাই। আর হবেই বা না কেন, একটি বাড়ি কেনা তো সহজ কোনও কাজ না। বাড়ি কেনার পেছনে প্রচুর অর্থ যেমন ব্যয় হয়, তেমনি সেই অর্থ উপার্জনের জন্য পরিশ্রমও করতে হয় দ্বিগুণ হারে। এ জন্য বাড়ি কেনার আগে সে দেশের জীবনযাত্রার মান, থাকা-খাওয়ার খরচ, সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বেশ ভালোভাবেই বিচার বিশ্লেষণ করতে হয়। এছাড়াও সে দেশের সংস্কৃতির সাথে মানিয়ে নেয়ার বিষয়টিও বেশ গুরুত্ব পায়। শুধু তাই নয়, কাঙ্ক্ষিত দেশটির সকল সুযোগ-সুবিধা বর্তমানে যে দেশে আপনি আছেন, সে দেশের সুযোগ-সুবিধার চেয়েও উন্নততর কিনা এবং এর পারিপার্শ্বিক অবস্থা কেমন, এসব কিছু বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় বাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বেশ ভালোভাবেই পর্যবেক্ষণ করতে হয়। কেননা, বাড়ি কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে এই বিষয়গুলো সমানভাবেই প্রাধান্য পায়।

গতানুগতিক জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে এবং উন্নত জীবন ব্যবস্থার আশায়, বর্তমান সময়ে পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষই তাদের নিজেদের দেশ ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছেন কোন উন্নত দেশে। আর এ যাত্রায় আপনার নিজের দেশ ব্যতীত পৃথিবীর অন্য কোন দেশে আপনি সামর্থ্যের মধ্যে দ্বিতীয় বাড়ি কিনতে পারবেন সে সম্পর্কে জেনে নেয়া অত্যন্ত জরুরি। দ্বিতীয় বাড়ি কেনার লক্ষ্যে যে ৬টি দেশে আপনি সামর্থ্যের মধ্যে বাড়ি কিনতে পারবেন সে বিষয়েই আমাদের আজকের ব্লগ।

তুরস্ক

Istanbul, Turkey
ইস্তানবুল, তুরস্ক

বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য তুরস্ক বেশ ভালো একটি অপশন। এখানে সাজানো গোছানো একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে প্রতি স্কয়ার ফুটের জন্য খরচ পড়বে ৬৯ ডলার। ঐতিহাসিক জায়গা এবং তুরস্কের খাবারের খ্যাতি এখন পুরো বিশ্বজুড়ে। এছাড়া নানাবিধ ধর্মীয় স্থাপনা এবং স্থাপত্য শৈলীতে ভরপুর তুরস্ক ঘুরে বেড়ানোর জন্য দারুণ এক দেশ। এক্ষেত্রে উদাহরণ দিতে হয় ধর্মীয় স্থাপনা হাজিয়া সোফিয়া এর, যা বর্তমানে মসজিদ হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও এখানে রয়েছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক গির্জা এবং চ্যাপল যা অটোম্যান শাসকরা তাদের রাজত্বকালে নির্মাণ করেছিল।

মেক্সিকো

Plaza de la liberacion, Guadalajara, Mexico
গুয়াদালাহারা, মেক্সিকো

আপনি যদি উত্তর আমেরিকার কোন প্রদেশে বাড়ি কেনার কথা ভেবে থাকেন, সেক্ষেত্রে মেক্সিকো আপনার জন্য দারুণ এক জায়গা হতে পারে। এখানে অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে গড়ে প্রতি স্কয়ার ফুটের জন্য আপনাকে ৯০ ডলার করে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সে দেশের বেতনের টাকায় ১৩ হাজার ৮৯১ ডলার খরচ করে আপনি ৪৬২ স্কয়ার ফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট পাবেন। ভিন্ন একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশে, মজাদার সব খাবার, নতুন রীতিনীতি এবং স্থানীয় মানুষদের সাথে সময়টা নিঃসন্দেহে খারাপ কাটবে না উত্তর আমেরিকার এই দেশে।

রাশিয়া

Zhivopisnyy Most, Moscow, Russia
মস্কো, রাশিয়া

আপনি যদি আবাসন খাতে দীর্ঘকালীন বিনিয়োগের কথা ভেবে থাকেন, তবে রাশিয়া হবে আপনার জন্য একটি সঠিক সিদ্ধান্ত। রাশিয়ায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে প্রতি স্কয়ার ফুটে খরচ পড়বে প্রায় ১২০ ডলারের মতো। সে অনুযায়ী একটি ৪১৫ স্কয়ার ফুটের অ্যাপার্টমেন্টের মালিক হতে সে দেশের অংকে আপনাকে খরচ করতে হবে প্রায় ১৬ হাজার ৬৫৭ ডলার। অন্যদিকে, সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক সুযোগ সুবিধা, দারুণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তো রয়েছেই। সৌন্দর্যে ভরপুর বিশাল এই দেশটির সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক ইতিহাস এবং স্থাপত্য যেন আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে প্রতি মুহূর্তে।

লাতভিয়া

Brīvības pieminekļa laukums, Central District, Rīga, Latvia
রিগা, লাতভিয়া

সমুদ্র এবং ঘন বনজঙ্গল যদি আপনার পছন্দের তালিকায় থাকে, তবে লাতভিয়া হবে আপনার জন্য সেরা জায়গা। একদিকে মধ্যযুগীয় স্থাপত্য, অন্যদিকে বাল্টিক সাগর, ইউরোপের সৌন্দর্যে যেন ভিন্ন এক মাত্রা যোগ করেছে লাতভিয়ার এই অপরূপ দৃশ্যপট। লাতভিয়াতে প্রতি স্কয়ার ফুট অ্যাপার্টমেন্টে খরচ পড়বে ১৩৬ ডলার। যা সার্বিকভাবে ১৫ হাজার ২৬৯ ডলারের কাছাকাছি। আর এই অংকের বিপরীতে আপনি ৩৩৮ স্কয়ার ফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক হতে পারবেন।

গ্রিস

Asos, Greece
আসোস, গ্রিস

 সামর্থ্যের মধ্যে বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় বাড়ি কেনার তালিকায় গ্রিসের নামটি উঠে আসবে খুব স্বাভাবিকভাবেই। কেননা, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের উষ্ণতা এবং শান্ত পরিবেশ আপনাকে এই দেশটিতে বিনিয়োগ করতে রীতিমত বাধ্য করবেই। গ্রিসে প্রতি স্কয়ার ফুট অ্যাপার্টমেন্টে আপনাকে দিতে হবে ১৪৯ ডলার। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে প্রায় ১৭ হাজার ২ ডলার খরচ করে আপনি ৩৪২ স্কয়ার ফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে পারবেন, যা এ দেশের দারুণ আবহাওয়া, স্থাপত্য এবং গ্রিক ঐতিহ্যের সামনে হয়তো কিছুই না।

পোল্যান্ড

Warsaw, Poland
ওয়ারশ, পোল্যান্ড

পোল্যান্ডে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে গেলে আপনাকে আনুমানিক ১৭২ ডলার খরচ করতে হবে প্রতি স্কয়ার ফুটের জন্য। স্থানীয় অংকে হিসাব করলে প্রায় ১৮ হাজার ৯০৬ ডলার খরচ করে আপনি ৩৩০ স্কয়ার ফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে পারবেন। বাকি দেশগুলোর মতো পোল্যান্ডের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও বেশ উন্নত। তবে এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করতেই হয় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিটি দেশ ভ্রমণের সুযোগের কথা। যা শুধু পোল্যান্ড নয়, পুরো ইউরোপ দেখার সুযোগ করে দেয় খুব সহজেই। আর তাই বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় বাড়ি কেনার তালিকায় পোল্যান্ড হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য।

সামর্থ্যের মধ্যে বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় বাড়ি কেনার তালিকায় এই ছয়টি দেশের মধ্যে যেকোনোটি হতে পারে আপনার ভবিষ্যৎ ঠিকানা। তা আপনি কোন দেশের বাসিন্দা হতে চান? জানিয়ে দিন কমেন্ট করে।

2 Comments

  1. Tasnim Jarin

    Most of the countries provide PR based on investment. Investing on real estate is considered the topmost amongst them. Henceforth, it would be easy to clinch a PR if you invest on foreign countries. For more info, contact the embassies of the countries on which you want to invest on real estate.

Write A Comment

Author