হোম ইন্টেরিয়রে স্কাল্পচার অনেকের কাছেই বিলাসবহুল কোন ভাবনা হতে পারে। স্কাল্পচার মানেই ঘরের ঠিক মধ্যেখানে রাখা বড় কোন বস্তু। ডুপ্লেক্স বাড়ি কিংবা বাংলোতে মানায় এমন কোন শৈলী। যদিও এমনটা না। স্কাল্পচার হতে পারে ছোট কোন ইট পাথরের বস্তু। যা কিনা আপনি চাইলেই বসার ঘরের সোফার পাশে কিংবা শোবার ঘরের ল্যাম্পশেডের পাশে রাখতে পারবেন। সত্যি বলতে স্কাল্পচার নানারকমের হয়ে থাকে। কেউ হয়তো ভালোবাসে আকারে বড় আবার কেউ ভালোবাসে আকারে ছোট স্কাল্পচার। সবরকম স্কাল্পচারেই বেশ গভীর একটা প্রভাব রয়েছে হোম ইন্টেরিয়রে। ঘরের ভেতর নিজস্বতা যারা পছন্দ করেন তারা স্কাল্পচার খুব ভালবাসেন। মনের ভাষা নাকি এই সমস্ত আর্ট পিস দেখেই বোঝা যায়। অনেকেই মনে করেন হোম ইন্টেরিয়রে স্কাল্পচার এর তেমন একটা জায়গা নেই। এটা হলেও হয় আবার নাহলেও হয়। এমন ভাবনাটিকে দূরে করতেই আজকের ব্লগ লিখা! তাহলে জানুন হোম ইন্টেরিয়রে স্কাল্পচার এর প্রভাব আসলে কতটুকু!
সবার থেকে আলাদা
এটা বেশ পরিষ্কার যে ঘরের জন্য স্কাল্পচার অনেকেই পছন্দ করবে না। এছাড়া মূল্যের দিকটা তো রয়েছেই। বেশীরভাগ স্কাল্পচারেরই দাম অনেক যা বেশির ভাগ মানুষের জন্যই ক্রয় করা বেশ কঠিন। তাছাড়া ঘরের জন্য মানানসই স্কাল্পচার খুঁজে বের করাটাও কিন্তু সবার পক্ষে সম্ভব নয়। স্কাল্পচার বা যেকোন আর্টকে ভালোবেসেঘরে রাখার মধ্যেও রয়েছে একটা শৈল্পিক ব্যাপার। ঘরের ডেকোরে মানিয়ে যায় এমন স্কাল্পচার খুঁজে আনাও অনেক কঠিন এক কাজ। তাই নিঃসন্দেহে হোম ইন্টেরিয়রে স্কাল্পচার আপনাকে বন্ধু ও প্রতিবেশী থেকে আলাদা করবে। ঘরের কোণে পছন্দসই আর্ট পিস মুহূর্তেই আপনার ঘরকে অন্য এক রূপ দিবে। মনে হবে এ যেন এক অন্য ভুবন।
ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে স্কাল্পচার
আপনার বাসাটি যদি এমন হয়ে থাকে যেখানে একটা ফোকাল পয়েন্ট তৈরি করা খুব জরুরী তাহলে আপনি চাইলে স্কাল্পচার বেছে নিতে পারেন। যা রাখার সাথে সাথে ঘরের ভেতর ফোকাল পয়েন্ট তৈরি হয়ে যাবে। শুধু বাসায় কেন, প্রতিটি ঘরে একটি করে ফোকাল পয়েন্ট থাকা উচিত। আর এই ফোকাল পয়েন্ট তৈরি করতে স্কাল্পচারের জুড়ি নেই। যেকোন আকারের স্কাল্পচার বেছে নিতে পারেন এবং পছন্দসই জায়গায় রাখতে পারেন, যাতে করে ঘরে যেই প্রবেশ করবে না কেন সে মুহূর্তেই যেন বুঝতে পারে যে এটা আপনার ঘরের ফোকাল পয়েন্ট।
জীবন দর্শনকে ইন্টেরিয়রে ফুটিয়ে তোলা
এই স্কাল্পচারের আর একটি চমৎকার বিষয় হচ্ছে, আপনার জীবন দর্শনকে বেশ সহজেই তুলে ধরতে পারে। আপনি জীবনকে আসলে কেমন করে দেখছেন বা আপনার ভাবনাটা আসলে কেমন সবকিছুই কিন্তু চাইলে আপনি স্কাল্পচার বা যেকোন আর্টপিসের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারবেন। নিজের ঘর যেন নিজেরই পৃথিবী সেই পৃথিবীকে আরও একটু অর্থবহভাবে সাজাতে আর্টপিসগুলো চমৎকারভাবে সাহায্য করতে পারে। শুধু যে স্কাল্পচার দিয়েই এটা সম্ভব তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে কোন চমৎকার ফটোগ্রাফ বা পেইন্টিং দিয়েও এই একই কাজটি করতে পারবেন। যা কিছু আপনার চিন্তা ভাবনাকে নিখুঁতভাবে প্রকাশ করে সেটাকে ঘরের ইন্টেরিয়রে ব্যবহার করা বেশ দারুণ একটা উপায় হতে পারে।
সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটা
ব্যক্তি সেবে আপনি কতটুকু সৃজনশীল সেই গুনও যেন হোম ইন্টেরিয়রে স্কাল্পচার কে ব্যবহার করে প্রকাশ করতে পারবেন। যেকোন আর্টপিস বা স্কাল্পচার ঘরের ভেতর রাখলেই কিন্তু সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। আর্টপিস বেছে নেয়ার উদ্দ্যেশ্য, দর্শন এবং শিল্পী এই সবকিছুতে সৃজনশীল হতে পারলেই মূলত আপনার হোম ইন্টেরিয়রও সৃজনশীল হয়ে উঠবে। স্কাল্পচার বাছাইয়ের মাধ্যমে নিজের রুচি এবং পছন্দের বিষয়টি খোলামেলা ভাবেই প্রকাশ করা যায়। বন্ধু কিংবা প্রতিবেশির সবার কাছেই একটু অন্যরকম হয়ে ওঠার সুযোগ হয়।
ঘরে রং এবং টেক্সচার জুড়ে দেয়
যতই অর্থ ব্যয় করুন না কেন, হোম ইন্টেরিয়র কখনোই সহজ ব্যাপার নয়। একটি ঘরকে সাজিয়ে তোলার পেছনে থাকতে হয় নানান ভাবনা নানা পরিকল্পনা। যতই চেষ্টা করুন না কেন, দিন শেষে মনে হবে ঘরের ডেকোর যেন সম্পূর্ণই হয়নি, আরও কাজ যেন বাকি। এইজন্যই কিন্তু হোম ডেকোরে আর্টপিসের প্রয়োজনটা হয়। যেকোন আর্টপিস ঘরের অসম্পূর্ণতাকে পূরণ করতে পারে। আর্টপিস বা স্কাল্পচার ঘরের ভেতরে আলাদা একটি রং জুড়ে দেয়। সাদামাটা ঘরটাও যেন প্রাণ খুঁজে পায় একটি আর্টপিসের জন্য। তাই আর্টপিস বেছে নেওয়ার কোন বিকল্প নেই।
সুতরাং, দেরি না করে আজই পছন্দের স্কাল্পচার বেছে নিন আর সবার থেকে একটু আলাদা একটা ইন্টেরিয়র তৈরি করুন। মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।