Reading Time: 4 minutes

অনেকের কাছে বসার ঘর আবার অনেকে বলেন ড্রয়িং রুম! যে যেভাবেই চিনে থাকুন না কেন, ঘরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান বা জায়গা এটি। মেহমান এলে কিংবা ঘরের কোন বিশেষ অনুষ্ঠান সব কিছু কিন্তু এখানেই হয়ে থাকে। সুতরাং এই ঘরটি অন্যান্য ঘরের থেকে বেশি সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা প্রয়োজন। ড্রয়িং রুমের ডেকোর , বাসায় আসা অতিথিদের কাছে আপনাকে করে তুলবে রুচিবান। একটা সুন্দর গুছানো পরিপাটি ড্রয়িং রুম আপনার আড্ডায় যেমন আপনাকে মধ্যমণি করে রাখবে, তেমনি আপনার অতিথির মনকেও রাঙিয়ে দিতে সাহায্য করবে।

মূলত ড্রয়িংরুম হচ্ছে ঘরের ফরমাল একটি স্পেস বা জায়গা। ঘরের অনেক অংশই আছে যার মধ্যে ড্রয়িং রুমকে বলা হয় পাবলিক রুম। সুতরাং, এই রুমের ডেকোর হতে হবে এমন যেখানে বেড়াতে আসা সকল মেহমান যেন স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজে পায়। কিভাবে কম খরচে বা বাজেটে ড্রয়িং রুমের ডেকোর করা যায় জেনে নেওয়া যাক…  

সোফা সেট
ড্রয়িং রুমে রঙ আনুন, হোক কুশনে কিংবা সোফায়

ড্রয়িং রুম কেমন মাপের হবে সেটার কোন সঠিক পরিমাপ নেই। তবে আমরা একটা ধারণা নিতে পারি। আমাদের একেক জনের বাড়ি একেক রকম। কারও, একটু বড় আবার কারও একটু ছোট। ধরুন, আপনার বাড়ি ১০০০ স্কয়ার ফিটের সেই ক্ষেত্রে ড্রয়িং রুম ১০ বাই ১২ হলে ভালো হয়। আর যদি বাড়িটি ২০০০ বা ৩০০০ স্কয়ার ফিটের হয় তাহলে ড্রয়িং  রুমটি ১২ বাই ১৪ বা ১০ বাই ১৩ হলে ভালো হয়। এতে আপনার ড্রয়িং রুমটি দেখতে সুন্দর হবে। ড্রয়িং রুমকে যতটা সম্ভব হালকাভাবে সাজালেই সুন্দর লাগে। একটা ড্রয়িং রুমে মূলত থাকে সোফা সেট, টি-টেবিল, ল্যাম্প, ঘরে বাঁচে এমন গাছ, ইজি চেয়ার, শোপিস স্ট্যান্ড আর খুব বেশি বড় হলে রুমটিতে বুক সেলফ এবং শোকেইস রাখা যেতে পারে। এগুলোর বাইরে কিভাবে আরও নতুন কিছু করা যায় জানা যাক। 

৫০০০ টাকায় ঘরের সাজ এবং ডাইনিং রুমের ডেকোর সম্ভব হলে কেন ড্রয়িং রুমের ডেকোর সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব। কিভাবে চলুন জানা যাক। 

দেয়াল রং করুন ও কার্পেট অথবা পর্দা বদলে নিন  

সোফা
দেয়ালে রঙ দিন, নতুন কিছু তৈরি করুন

হয়তো ভাবছেন, কেনই বা ড্রয়িং রুমের দেয়ালের রঙ বদলে ফেলতে বলছি! আসলে পুরো বাড়ি রাঙিয়ে ফেলার থেকে ড্রয়িং রুমের একটি দেয়াল কিংবা একটি কর্নার যদি রাঙিয়ে ফেলেন এই পুরনো ড্রয়িং রুম কিন্তু হয়ে উঠতে পারে নতুনের মত। অনেক রঙের জন্য রুম দিনের বেলাও অন্ধকার লাগে তাই বাইরে থেকে আসা মানুষের কাছে যেন এমনটা মনে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ড্রয়িং  রুমের দেয়ালের কালার কিছুটা হালকা হলে ভালো হয়, যেমন হালকা ধূসর, সাদা, খয়েরি ইত্যাদি। রঙের রয়েছে নানা টেক্সচার সেগুলো সম্বন্ধে জেনে তবেই রঙ বেঁছে নিন। বাজারে যেকোন রঙের কৌটা মাঝারী মাপেরগুলো মূল্য শুরু হয় ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে হাজারখানেকের মধ্যে।

শোপিস
পছন্দ মত শোপিস রাখুন

এরপর চলে যেতে পারি কার্পেটের দিকে। বাজারে পাওয়া যায় নানা ধরণের কার্পেট, কিন্তু শুধু দাম মিলিয়ে বা নকশা মিলিয়েই কিনে ফেললেই যে কাজ চুকে যাবে তা কিন্তু নয়! কার্পেট সম্বন্ধে ভাল মত জেনে তবেই ঘরের জন্য কার্পেট কিনুন। ড্রয়িং রুমের কার্পেটের ক্ষেত্রেও নির্বাচন করা উচিত গাঢ় রঙ, সেই ক্ষেত্রে আপনি আপনার পছন্দের খাতায় লিখে নিতে পারেন গাঢ় সবুজ, কালো, খয়েরি রং। তবে আমাদের দেশের জন্য ছোট কার্পেট ব্যবহার করাই ভালো। এতে সহজে ময়লা বোঝা যায় না এবং বারবার পরিষ্কার করার ঝামেলা থাকে না। 

তবে পর্দার ক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য আছে। ভারী পর্দা ছোট ঘরের জন্য একদম ভালো না, এতে রুমটি আরও ছোট দেখায়, তাই ছোট রুমের ক্ষেত্রে হালকা পর্দা নির্বাচন করা উত্তম। ঠিক একইভাবে বড় রুমের ক্ষেত্রে আপনি অনায়াসে ভারী পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। পর্দার রং পছন্দের ক্ষেত্রে হালকা রং নির্বাচন করাই ভালো, আর অবশ্যই দেয়ালের সঙ্গে মিলিয়ে পর্দার রং নির্বাচন করা উচিত, এতে ড্রয়িং রুমটি দেখতে গোছানো ও পরিপাটি লাগবে। কার্পেট ও পর্দা আপনি পেয়ে যাবেন ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে নানা দামের মধ্যে।  

নানা রকম ডেকোরেশন পিস রাখুন

দেয়ালে কাঠের বক্স ঝুলানো
ডেকোরেশনের জন্য নতুন কিছু ব্যবহার করুন

ড্রয়িং রুমের ডেকোর নিয়ে কথা হবে আর বাহারি সব শোপিসগুলোর কথা বলা হবে না তা কি হয়? ড্রয়িং রুমকে আরও এক ধাপ সুন্দর করতে শহরের মাঝে বেশি খোঁজ করতে হবে না। ঘরের ভেতর বাঙালী ভাব রাখতে চান? তাহলে স্বদেশী পণ্য দিয়ে ঘরের ভেতরটা সাজিয়ে নিতে হবে। দেয়ালে ঝুলিয়ে দিতে পারেন নানারকম দেশীয় ছবির ফ্রেম! দেয়ালের এঁকে দিতে পারেন ওয়ালআর্ট। সেক্ষেত্রে নিজেদের পরিবারিক ছবি না লাগানোই ভালো কারণ ড্রয়িং রুমে বাইরের মানুষের আনাগোনাই বেশি থাকে। সে ক্ষেত্রে ভালো কোনো আর্টিস্টের আঁকা ছবি রাখতে পারেন ড্রয়িং রুমে। সোফা সেটের কুশন কাভার কিংবা সোফার কাভার পরিবর্তন করতে পারেন। দিতে পারেন রঙিন কোন রঙ। এমন রঙ বাছাই করবেন যা কিনা ঘরকে আলো করে রাখবে। এখনকার সময়ে বাজারে আছে নানা রকমের বাতি সেগুলো ব্যবহার করতে ভুলবেন না। ফাল্গুনের সময় ফুলের ছোঁয়া থাকা চাই ই চাই। ছোট ছোট গাছের চারা গুলো রাখতে ভুলবেন না যেন! ঘরের ভেতর গাছ ঘরকে আরও বেশি রিফ্রেশমেন্ট এনে দেয়। এখানের সব কিছুই আপনি পেতে পারেন ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার খানেক টাকার মধ্যে! 

বাজেটেও কিন্তু নিজের ঘর বেশ সুন্দর করেই সাজানো সম্ভব। যদি একটু সময় নিয়ে চিন্তা করা হয়। খুব সহজে ঘরের ডেকোর করতে চান তাহলে আমাদের ব্লগগুলো নিয়মিত পড়তে থাকুন। এমন চমৎকার সব ডেকোর আইডিয়া আর কোথায় পাবেন? 

Write A Comment