একজন আদর্শ রিয়েল এস্টেট এজেন্টের কর্মদক্ষতার পাশাপাশি শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের অধিকারীও হতে হয়। আপনার কাঙ্ক্ষিত গ্রাহকের আপনার উপর আস্থা রাখার অনেকটাই নির্ভর করে আপনার ব্যক্তিত্বের উপর। একজন রিয়েল এস্টেট এজেন্ট তার ব্যক্তিগত সততা আর পেশাদার পদ্ধতিগুলোর নিরিখেই কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গ্রাহকের সাথে প্রপার্টি সংক্রান্ত চুক্তি সফলভাবে করতে পারেন। কিন্তু, সময়ের সাথে রিয়েল এস্টেট খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার আর সেই সাথে সম্প্রতি যোগ হওয়া “প্রপটেক” এই খাতে এনে দিয়েছে নতুন এক মাত্রা। রিয়েল এস্টেট খাতে ডেটার গুরুত্ব ছিল বরাবরই বেশি। যারফলে, পেশাদার রিয়েল এস্টেট এজেন্টরা ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে এই ডেটার উপর নির্ভর করে তাদের লিড এবং এই ব্যবসাকে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে শুরু করলেন। যার ফলে একটি লিড থেকে আরও লিডের সন্ধান পেতে লাগলেন। তাই আজকের লেখার বিষয় হচ্ছে, কীভাবে আপনি রিয়েল এস্টেট খাতে ডেটা প্রয়োগ করবেন সেই সম্বন্ধে!
জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস)

এর স্পষ্ট বাংলা হচ্ছে “ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা”। জিওট্যাগ এবং ক্লাস্টারিং এর মাধ্যমে ম্যাপিং করে বেশ চমৎকারভাবে রিয়েল এস্টেট খাতে ডেটা প্রয়োগ করা সম্ভব। এটার অর্থ হচ্ছে আপনি একাধিক জিআইএস সিস্টেম ব্যবহার করে সহজেই তাদের সনাক্ত করতে পারছেন। রিয়েল এস্টেট খাতে লোকেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। জিআইএস আমাদের নানাভাবে সহায়তা করে থাকে কখনো লোকেশন বুঝতে কখনো বা লোকেশনের সুযোগ সুবিধা বিশ্লেষণ আবার কখনো পারিপার্শ্বিক অবস্থান বুঝতেও সাহায্য করে। এমনকি সাইট নির্বাচন, মূল্য নির্ধারণ, স্থানীয় সকল সুযোগ-সুবিধা, জনসংখ্যা, আশেপাশের পারিপার্শ্বিক অবস্থা এই সবকিছুই ওপেন সোর্স ডেটা ডোমেন ব্যবহার একটি একক মডিউলে আনতে পারছেন এবং যাচাই বাছাইও করতে পারছেন। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় জিআইএস রিয়েল এস্টেট খাতকে পৌঁছে দিয়েছে অনন্য এক চূড়ায়।
ক্লাস্টার অ্যানালাইসিস

রিয়েল এস্টেট খাতের জন্য লোকেশন এবং আশেপাশের বসতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকোন প্রপার্টি কেনা বা বেচার ক্ষেত্রে এই দুটো উপকরণ চরম নাটকীয় পরিবর্তন আনতে পারে। দেশের সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকে বিভিন্ন রকম উপায়ে কাজ করে বা চালিত হয়ে থাকে। কিছু কিছু এলাকাতে কালস্টার বেসড সোসাইটি রয়েছে। আবার কিছু এলাকাতে রয়েছে গণআবাসন ব্যবস্থা। এই কালস্টার বিশ্লেষণের প্রধান কাজ হল, রিয়েল এস্টেট খাতের ডেটাগুলোকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করা। চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়াটি সহায়তা করবে কোন প্রপার্টি কেমন কাজ করবে। এছাড়াও, ক্লাস্টার বিশ্লেষণ আরও সহায়তা করবে নির্দিষ্ট লোকেশনে কোন প্রপার্টি কেমন কাজ করবে। যার ফলে আমরা এমন কিছু ডেটা পাই যেগুলোর মাধ্যমে প্রপার্টিতে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া আরও সহজ হয়ে ওঠে!
অটোমেটেড ভ্যালুয়েশন মডেল (এভিএম)

প্রপার্টির আনুমানিক বাজার মূল্য নির্ধারণ করতে যে ডেটাগুলো প্রয়োজন তা প্রক্রিয়া করে আনাই অটোমেটেড ভ্যালুয়েশন মডেল (এভিএম) এর প্রধান কাজ। এই মডেলটি ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে বর্তমান সময় অনুযায়ী বাজার মূল্য নির্ধারণ করতে সহায়তা করে। রিয়েল এস্টেট খাতের তথ্য সংগ্রহের জন্য এই মডেলটি বৃহৎ আকারে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
টাইম সিরিজ ফরকাস্টিং (টিএসএফ)

এটা রিয়েল এস্টেট খাতের ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিটি আমাদের সহায়তা করে ভবিষ্যতের রিয়েল এস্টেট সংক্রান্ত সকল কার্যকলাপ বুঝতে ও জানতে। এই প্রযুক্তিটি বিনিয়োগের ক্ষেত্র, ব্যবসায়ের বিকাশ এবং বিনিয়োগ পরবর্তী মুনাফা সম্বন্ধে আগেই ধারণা দিয়ে থাকে। ভবিষৎবাণী করতে ব্যবহার করা হয় বেশ কিছু মডেল। যার মধ্যে রয়েছে টিএসএফ স্বল্প মেয়াদী ভবিষ্যতবাণীর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে, অটো-রিগ্রেসিভ ইন্টিগ্রেটেড মুভিং এভারেজ (এআরআইএমএ) মডেল এবং বৃহৎ আকারের ডেটার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে টিএসএফ ভেক্টর অটো-রিগ্রেশন (ভিএআর) এবং ভেক্টর অটো কারেকশন মডেল (ভিআইসিএম)।
বর্তমান সময়ে রিয়েল এস্টেট খাতে ডেটার উপর শতাধিক নির্ভরশীলতা গড়ে উঠেছে। ওপেন-সোর্স ডেটা ব্যবহার করা এবং ডেটা নির্ভর ফলাফল নিয়েই কাজ করা। রিয়েল এস্টেট খাতে ডেটার গুরুত্ব বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ দুটোর জন্যই অধিক প্রয়োজনীয়।