বাড়ির সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত স্পেসগুলোর একটি হচ্ছে কিচেন। তাই একটি নতুন কিচেন প্ল্যান করতে হলে, প্রথমেই গুরুত্বপূর্ণ যে পদক্ষেপটি নিতে হবে তা হলো, কিচেন স্পেসে আপনার প্রয়োজন অনুসারে সবকিছু সেট আপ করা এবং একটি লে- আউট তৈরি করা। এই লে-আউট প্ল্যানই কিচেনের যে কোনো কাজকে সহজ ও প্রতিটি স্পেসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে আপনাকে সহায়তা করবে। একটি ফাংশনাল কিচেন কিন্তু ঘরের মাঝে আরামপ্রদতা ও লাক্সারিয়াস জীবন উপভোগ করতেও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই যেকোনো কিচেন ইন্টেরিয়র করতে হলে, কিছু জরুরি বিষয় আপনাকে বিবেচনায় রাখতে হবে।
আপনিও কি নিজের বা পরিবারের প্রিয় মানুষটির জন্য কিচেন ইন্টেরিয়র করার প্ল্যান করছেন? তাহলে কাঙ্ক্ষিত কিচেনটি সেট আপ করার আগে, সেরা ৫টি কিচেন ইন্টেরিয়র টিপস সম্পর্কে আসুন জেনে আসা যাক, আজকের ব্লগে।
প্রথমে লে-আউট প্ল্যান করুন
কাঙ্ক্ষিত কিচেনটি তৈরির জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিচেন ইন্টেরিয়র টিপস হচ্ছে, লে-আউট প্ল্যান করা। একটি পারফেক্ট কিচেনের ভিত্তিই হচ্ছে এই লে-আউট প্ল্যান। বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় কিচেন ডিজাইনগুলোতে ৪টি বেসিক লেআউট স্টাইল দেখতে পাওয়া যায়। যেমন, ওপেন স্টাইল, এল(L)-আকৃতির স্টাইল, সমান্তরাল বা প্যারালাল স্টাইল এবং ইউ(U)-আকৃতির স্টাইল। সবগুলো কিচেন স্টাইলেরই নিজস্ব স্পেস সেট আপ রয়েছে। তবে প্রতিটি স্টাইলেই একটি বৈশিষ্ট্য আপনি কমন পাবেন, আর তা হলো কিচেনে পারফেক্ট ওয়ার্ক-ফ্লো এর নিশ্চয়তা। সিঙ্কের অবস্থান, রান্নার স্পেস এবং রেফ্রিজারেটর, একে অপরের পরিপূরক কিনা এবং রান্নাঘরে দক্ষতা বাড়ায় কি না, তা নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে লে-আউট প্ল্যান।
কোন অ্যাপ্ল্যায়েন্সটি ব্যবহার করবেন সিদ্ধান্ত নিন
আপনার কিচেন প্ল্যানটি যদি ঠিকঠাক না হয় তাহলে, প্রয়োজনীয় সকল ইলেক্ট্রনিক অ্যাপ্লায়েন্স এর জন্য জায়গার সংকুলান করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এক্ষেত্রে জরুরি একটি কিচেন ইন্টেরিয়র টিপস হচ্ছে, কিচেনের জন্য কোন অ্যাপ্লায়েন্সগুলো দরকারি তা আগেই নির্ধারণ করুন এবং কেনার জন্য অত্যাবশ্যকীয় অ্যাপ্ল্যায়েন্সগুলোকে অগ্রাধিকার দিন। কিচেন প্ল্যান করার শুরুতেই নির্ধারিত এসব অ্যাপ্লায়েন্স এর আকার এবং ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি প্রায়শই ওভেন ব্যবহার করে থাকেন তাহলে এতে বিনিয়োগ করা বেশ ভালো সিদ্ধান্ত। কিন্তু, আপনি যদি নিয়মিত ওভেন ব্যবহার করতে অভ্যস্ত না হন, তাহলে ওভেন কেনা আপনার জন্য সম্ভবত সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না।
পর্যাপ্ত পাওয়ার পয়েন্ট ইন্সটল করুন
নিশ্চয়ই আপনি চাইবেন না যে, একটি ট্রেন্ডি কিচেন ডিজাইন করার পরে ইলেক্ট্রনিক অ্যাপ্লায়েন্সগুলো চালানোর জন্য সেখানে পর্যাপ্ত পাওয়ার পয়েন্ট না থাকুক। আর তাই আপনি যে ইলেকট্রনিক অ্যাপ্লায়েন্সগুলো ব্যবহার করবেন এবং সেগুলো কিচেনের কোথায় থাকবে, তা আগে থেকেই ভেবে রাখা জরুরি। তাতে করে আপনি ঠিক জায়গায় পর্যাপ্ত পাওয়ার পয়েন্ট গুলো আগে থেকেই সেট করে নিতে পারবেন। এবং পরবর্তীতে এ নিয়ে আপনার বাড়তি কোনো বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়।
পর্যাপ্ত স্টোরেজ রাখুন
কিচেন প্ল্যান করার সময় বেশিরভাগ মানুষ যে সাধারণ ভুলটি করে তা হল কিচেনে স্টোরেজের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না রাখা। কিচেনের প্রতিটি ছোট ছোট স্পেস এরও সঠিক ও সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি কিচেন ইন্টেরিয়র টিপস। আর এই টিপসকে কাজে লাগাতে, লম্বালম্বিভাবে সিলিং পর্যন্ত কিচেন ক্যাবিনেট করুন। এতে কম জায়গাতে কিচেন ক্যাবিনেটটি রাখতে পারবেন আর উপরের দিকে জিনিসপত্র স্টোর করতে প্রচুর জায়গা পাবেন। সেইসাথে, কাটলারি থেকে ইলেকট্রনিক্স পর্যন্ত আপনার ক্যাবিনেটে স্টোর করার জন্য যা যা প্রয়োজন হবে তার একটি তালিকা তৈরি করে নিন।
পর্যাপ্ত আলো-বাতাস সরবরাহের ব্যবস্থা করুন
বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই ক্লোসড উইন্ডো বা ফিক্সড গ্লাস উইন্ডো পছন্দ করলেও, যে কোনো কিচেনে অবশ্যই পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচল নিশ্চিত করা উচিৎ। এতে অফুরন্ত আলো বাতাস প্রবাহের কারণে রান্নাঘর ধোঁয়ামুক্ত থাকে এবং কিচেনের পরিবেশও থাকে সতেজ ও প্রাণবন্ত। গ্যাস লিক এবং আগুনের ঝুঁকির মতো জরুরি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেও নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তায় কিচেনে পর্যাপ্ত ও প্রশস্ত জানালা থাকাটা বাঞ্ছনীয়। সাথে, রান্নাঘরে পর্যাপ্ত জানালা থাকার পরেও, কিচেনকে ধোঁয়ামুক্ত রাখতে একটি এক্সোস্ট ফ্যান ইন্সটল করতে ভুলবেন না। এটা ধোঁয়ামুক্ত রাখার সাথে সাথে রান্নাঘরের সমস্ত গন্ধ বের করে দেয়। ফলে কিচেনেও একটি সহনীয় ও আরামদায়ক পরিবেশ বিদ্যমান থাকে।
যাই হোক না কেন, কিচেন হচ্ছে যে কোনো ঘরের জন্য সব থেকে প্রয়োজনীয় জায়গা। প্রতিটি ব্যক্তি ও পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী এর ডিজাইন যে ভিন্ন ভিন্ন হবে, সেটাই স্বাভাবিক। তবে যে ডিজাইনই করুন না কেন, প্ল্যানিং এর প্রথম ধাপে পর্যাপ্ত রিসার্চ করতে একদমই ভুলবেন না। আর আপনার কাঙ্ক্ষিত কিচেন তৈরির পরিকল্পনায় যেন কোনো ভুল না থেকে যায়, এজন্যই ৫টি গুরুত্বপূর্ণ কিচেন ইন্টেরিয়র টিপস ছিল আজকের লেখায়। এ নিয়ে আপনার কোনো জিজ্ঞাসা বা মন্তব্য থাকলে আমাদের জানান মন্তব্যের ঘরে।
বাজেটের মধ্যে মনের মত কিচেন ইন্টেরিয়র সাজাতে ঢাকার মাঝে রয়েছে বিপ্রপার্টি ইন্টেরিয়র সল্যুশন। পারফেক্ট কিচেন ইন্টেরিয়র করে নিতে যোগাযোগ করতে পারেন আমাদের সাথে।