বাজার নিয়ে আলাপ করবার আগে জানতে হবে বাজার কয় ধরণের, বাজার হলো দুই ধরণের! এক, অপঁচনশীল আর দুই পঁচনশীল। এখন অপঁচনশীল বাজার হল, যা ফ্রিজের বাইরে রেখে দিলেও পঁচে না। যেমন, আলু,পেঁয়াজ, চাল, আটা, বিস্কুট ইত্যাদি। আর এদিকে পঁচনশীল বাজার হচ্ছে, মাছ, মাংস, তরকারি! অপঁচনশীল বাজারগুলো আপনি এক দুই মাসের জন্য করে রাখতে পারেন এই পরিস্থিতিতে কিন্তু পঁচনশীল বাজার আপনি ৭ দিনের বেশি কোন ভাবেই রাখতে পারবেন না। এক্ষেত্রে আপনাকে বাজা্রে যেতেই হবে। আরও একটি বিষয়ে আলোকপাত না করলেই নয় তা হল, ঔষধ! এসব কিনতেও আপনাকে যেতে হচ্ছে বাজারে বা সুপার শপে! এখন, সপ্তাহে একবার হোক বা ১৫ দিনে একবার আপনাকে যেহেতু বাজারে যেতেই হচ্ছে তাই আজকের ব্লগটি বাজারে হাইজিন কিভাবে মেইন্টেইন করবেন এ নিয়ে। চলুন শুউর করা যাক!
বাজারে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই মাস্ক পড়বেন!

এই ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো ওষুধ বা টিকা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার না হওয়ায় একমাত্র প্রতিরোধই হচ্ছে এই রোগ থেকে বাঁচার উপায়। এ ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আপনি আক্রান্ত হোন কিংবা সুস্থ দু ভাবেই আপনাকে মাস্ক পড়তে হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার করতেই হবে। ঘর থেকে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পড়তে হবে। অনেকে আছেন বাইরে গেলে যখন কেউ পাশে না থাকে মাস্ক খুলে ফেলছেন এমন মোটেও করা যাবে না। আপনি এক মুহূর্তের জন্যও এই মাস্ক খুলতে পারবেন না! কেননা আপনি নিজেই জানেন না, আপনি কখন বাতাসে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ভাইরাস টেনে ভিতরে নিতে নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সাবধানতাই একমাত্র উপায়।
দুরুত্ব নিশ্চিত করবেন

২০১৯-২০২০ এর করোনা ভাইরাস মহামারী চলাকালীন সময়ে “সিডিসি” সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে কিছু নিয়ম কানুন তৈরি করে। যেগুলো হল, “সমাবেশ থেকে দূরে থাকা, জনসমাগম এড়ানো, সম্ভব হলে অন্যের কাছ থেকে প্রায় ছয় ফুট বা দুই মিটার দুরুত্ব রাখা ইত্যাদি। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন যে, “ হাঁচি দেওয়ার সময় বা জোর করে শ্বাস নিলে তা মুখ বা নাকের ফোঁটা থেকে ছয় ফুট পর্যন্ত করোনা ভাইরাস ভ্রমণ করতে পারে”। তাই প্রত্যেককে এই সংক্রমণ রোধ করতে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে দুই মিটার শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু আপনি যখন বাজারে যাচ্ছেন এই দূরত্ব মেইন্টেইন করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। লাইন মেইন্টেইন করে দাঁড়ানো। গায়ের উপর না পড়ে যাওয়া। ধাক্কাধাক্কি অবশ্যই না করা! ধৈর্য্য ধরে আপনার সামনের ক্রেতার কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা।
কমন স্পেস গুলো জীবাণুমুক্ত করবেন

করোনা ভাইরাস থেকে ঘরের সুরক্ষায় অন্যতম হচ্ছে ঘরের কম স্পেস জীবাণু নাশক দিয়ে পরিষ্কার করা। ঠিক তেমনি বাজারের কিছু কমন স্পেস আছে যেগুলো সকলেই স্পর্শ করে থাকে। সেগুলো জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণু মুক্ত করে তবেই স্পর্শ করুন। সুপারশপে বাজার করার সময় অবশ্যই আপনাকে ঝুড়ি হাতে নিতে হবে। আর ঝুড়ি কিংবা কার্টের হাতলগুলো প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ স্পর্শ করে। তাই এই হাতল থেকে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুপারশপগুলোর প্রায় অর্ধেক ঝুড়িতে থাকে এনটেরোব্যাক্টেরিয়া, যার কারণে অন্ত্রের বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। তাই জীবাণুমুক্ত থাকতে ঝুঁড়ির হাতলগুলো জীবাণুনাশক ‘ওয়াইপস’ দিয়ে মুছে নিতে হবে। সেই সাথে হ্যান্ড স্যাণিটাইজার রাখতে ভুলবেন না! এখন ঘরেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করা সম্ভব।
নগদ অর্থ ব্যবহার না করে কার্ড ব্যবহার করুন

যদিও সকলের জন্য এটা কার্যকরী নয় তবুও, যদি নগদের বিনিময়ে কার্ডে টাকা পরিশোধ সম্ভব তাহলে এটা অবশ্যই করা উচিত। কার্ড আপনি সহজেই জীবাণু মুক্ত করতে পারছেন কিন্তু নগদ টাকার বেলায় তা সম্ভব নয়। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আমরা যা ই ক্রয় বা বাসায় আনি না কেন তা যেন জীবাণু মুক্ত করা হয় কিংবা সুযোগ থাকে। এক্ষেত্রে কার্ড বা বিকাশ পেমেন্ট খুবই কার্যকরী!। যদিও মোবাইল ফোন ব্যবহারে হতে হবে অধিক সতর্ক। বাজারে হাইজিন মেইন্টেইন করা একটু কঠিন হলেও সঠিক প্ল্যানিং এর মাধ্যমে এটা করা সম্ভব।
লাইন ধরতে হয় এমন দোকান বা জায়গা পরিহার করুন

যতটুকু সম্ভব আপনি ভিড় বেশি কিংবা লাইন ধরতে হয় এমন দোকান, বাজার বা সুপার শপ এড়িয়ে চলবেন। চেষ্টা করবেন শাক-সবজি রাস্তার পাশের ভ্যান থেকে কেনার আর বাকী যে অপঁচনশীল কেনাকাটা তা এলাকার মুদির দোকান থেকে সেরে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে বাজারে হাইজিন আপনি সহজেই মেইন্টেইন করতে পারবেন।
বাজারে যাওয়ার পূর্বে যা করবেন তা হচ্ছে, একটা লিস্ট তৈরি করে নিবেন। সারা মাসের একটা লিস্ট থাকলে বাজারে আপনার কোন কিছু কিনতে সময় নষ্ট হবে না। এছাড়া এখন মাহে রমজান! রমজানে সুস্থ থাকতে যা খাবেন তা নিশ্চয়ই আগেই ভেবে রেখেছেন। সেই হিসেবে বাজার করে নিন।