Reading Time: 4 minutes

পুরনো বাথরুমকে নতুন করতে চাচ্ছেন? কিন্তু ভাবছেন কিভাবে করবেন? তাহলে নিচের আইডিয়া গুলো কাজে দিবে। ছোটখাটো কৌশল ও হালকা কিছু উপাদান যোগ কিংবা বিয়োগ করলেই আপনার পুরনো বাথরুমটি হয়ে উঠবে নতুনের মত! কিন্তু নতুনের মত করতে গিয়ে কিছু ভুল ত্রুটি আমরা করে ফেলি যা পরে গিয়ে আমাদের বেশ ভুগিয়ে থাকে। তাছাড়া এটা দীর্ঘমেয়াদী একটা বিনিয়োগ, সুতরাং আমাদের অনেক সাবধানে বাথরুম লে আউট ডিজাইন করতে হবে এবং কিছু জিনিসের প্রতি বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়া, ঘরের এই অংশটিকে আমরা অনেকটাই অবহেলার দৃষ্টিতে দেখি অথচ এই অংশটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা ভাবছেন ঘরের বাথরুমটি নতুন করে তৈরি করে নিবেন তাঁরা এই বিষয়গুলো সম্বন্ধে জেনে রাখুন। বাথরুম তৈরি করার পূর্বে জানা থাকলে এগুলো এড়িয়ে চলা সম্ভব। আসুন তবে জেনে নেই। 

আপনার চাহিদাগুলো সম্বন্ধে নিশ্চিত হোন    

বাথরুম
বাথরুম হওয়া চাই খোলামেলা

বাথরুম তৈরি বা ডিজাইন করার সময় নিজের চাহিদাগুলো সম্বন্ধে নিশ্চিত হোন। সুতরাং, কিছু করার আগে বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন আপনি কীভাবে আপনার বাথরুমটি দেখতে চাচ্ছেন? আপনি ছাড়া অন্য কে এটি ব্যবহার করবে? এবং আপনি কতটা সময় সেখানে ব্যয় করবেন? এই সমস্ত ভাবনা আপনাকে সাহায্য করবে আপনার বাথরুম কেমন হবে। আগেই যদি এই বিষয়গুলো আপনার কাছে পরিষ্কার থাকে তাহলে আপনি সহজেই অনেক ভুল ত্রুটি এড়াতে পারবেন। তাছাড়া, বাথরুম তৈরি বা ডিজাইন কতটা ব্যয়বহুল হতে পারে সে সম্বন্ধেও ধারণা পেয়ে যাবেন। 

 লাইটিং 

আমরা যখন বাথরুম তৈরি বা ডেকোরেশন করে থাকি স্বভাবত নান্দনিক ব্যাপারটা আমরা উপেক্ষা করে যাই। কেননা বাথরুম আমাদের কাছে কিছুটা অবহেলিত একটি জায়গা। খুব সহজ ভাবে বাথরুমকে চাইলেই নতুন করে তুলতে পারি কেবল উষ্ণ আলো ব্যবহার করে। উষ্ণ আলো যেমন নান্দনিকতা যোগ করবে তেমনি  শীতল একটি অনুভবও দিবে। ইন্টেরিয়র ডিজাইনের ক্ষেত্রে আলোর একটা বিশাল প্রভাব রয়েছে। বাজারে এখন নানারকম লাইট সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে সেগুলো কিন্তু বাথরুম ডেকোরেশন চমৎকারভাবে বদলে দিতে পারে। 

মাপ পরিমাপ 

বাথরুমের জন্য যেকোন জিনিস বেছে নেওয়ার আগে অবশ্যই বাথরুমের মাপ সম্বন্ধে জানতে হবে। নতুবা বাথরুম থেকে হয় বড় কোন কিছু কিনে আনবেন নয়তো ছোট। তাই বাজারে যাবার আগে বা কোন পরিকল্পনা করার আগে আপনাকে অবশ্যই বাথরুমের সবকিছুর পরিমাপ সম্বন্ধে আপনার স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। কমোড থেকে শুরু করে বেসিন সবকিছু একটা নির্দিষ্ট পরিমাপে হওয়া উচিত। 

মেঝে

অনেকেই বাথরুমের মেঝে এড়িয়ে যায়। ভাবেন বাথরুমের মেঝে নিয়ে আবার ভাবার কি আছে! কিন্তু এখানেই অনেকে ভুল করে ফেলেন। সুন্দর আর উজ্জ্বল রঙের মেঝে বাছাইয়ের মাধ্যমে স্টেটমেন্ট তৈরি করা যেতে পারে সহজে। বাথরুম বলেই যে একঘেয়ে কোন মেঝে বেছে নিতে হবে তা কেন! ফ্লোর যত বেশি দেখা যাবে, বাথরুম তত বড় মনে হবে। ন্যাচারাল লাইটিং বাথরুমের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। অনেক বাথরুমেই জানালা ছোট থাকে অথবা একটু উঁচুতে থাকে, সে ক্ষেত্রে বাথরুমে খুব বেশি আলো হয় না। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে কৃত্রিম আলোর ব্যবহার করতে পারেন।

বাথরুম
হালকা রঙের টাইলস বেছে নিন

সময় নিয়ে টাইলস বাছাই 

অনেকেই বাথরুমের টাইলস নিয়ে সময় দিতে চান না। অনেকেই ঠিকঠাক না ভেবেই বাথরুমের টাইলস বেছে নেন। এটা একদমই করা উচিত নয়। বাথরুমের টাইলস বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনাকে হতে হবে সচেতন। সময় নিয়ে সঠিক টাইলস বেছে নিতে হবে। বাথরুমের টাইলস যেন পিচ্ছিল না হয়। বাথরুম ছোট হলে গাঢ় রঙের টাইলস ব্যবহার না করে হালকা রঙের টাইলস বেছে নিন। কালো, গাঢ়, নীল বা মেরুন রঙের টাইলস বাথরুমের ক্ষেত্রে এড়ানোই ভালো। এ ধরনের টাইলসের ওপর সাবানের দাগ সহজে বসে যায় এবং পরিষ্কার করাও কঠিন। আর বাথরুমে আলোও যায় কমে। 

আয়না

বাথরুমের জন্য সঠিক আয়না বেছে নিলে বাথরুম অনেক বড় দেখাবে এবং খোলামেলা লাগবে। আপনার বাথরুম অনুযায়ী আয়না বেছে নিতে হবে। আয়নাটা যদি বড় বেছে নিন এক্ষেত্রে বাথরুমের আউটলুকটাই বদলে যেতে পারে। বাথরুমে ঢোকার মুখে লাগান সুদৃশ্য বেসিন এবং ঝকঝকে আয়না। বাজারে অনেক ডেকোরেটিভ আয়না পাওয়া যায়। বাথরুম ছোট হলে বেসিনের ওপর একটু বড় সাইজের আয়না লাগালে বাথরুম বড় দেখাবে। 

গোসলের জায়গা 

গোসলের জায়গা সবচেয়ে শেষে রাখা ভালো, যাতে গোসলের সময় পুরো বাথরুম ভিজে না যায়। এছাড়া বাথটাব শাওয়ার ট্রে বা শাওয়ার সিস্টেম ঘিরে শাওয়ার কার্টেন ব্যবহার করতে পারেন। বাথরুমে জায়গা থাকলে শাওয়ার এনক্লোজারও লাগাতে পারেন।

বাথরুম
ফ্লোর যত বেশি দেখা যাবে, বাথরুম তত বড় মনে হবে

বেসিন 

বাথরুমের বেসিন কাউন্টার টপে মার্বেল বা গ্রানাইট ব্যবহার করতে পারেন। আপনার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সাজিয়ে রাখুন বেসিন কাউন্টারে। কাউন্টারের নিচের অংশে পানি নিরোধক উপাদান দিয়ে কেবিনেট বানিয়ে নিতে পারেন।

বাথরুম কেবিনেট 

বাথরুমের খালি দেয়ালে গ্লাসের শেলফ বা কর্নারে কেবিনেট লাগাতে পারেন। সব সময় ব্যবহার করেন না অথচ প্রয়োজনীয় এমন জিনিসগুলো এখানে রেখে দিতে পারেন। যেমন- তোয়ালে, কসমেটিকস, ফাস্ট এইড, পারফিউম, হেয়ার ড্রায়ার, এয়ার ফ্রেশনার, মোম ইত্যাদি।

এই ছিল আমাদের বাথরুম তৈরি নিয়ে বেশ কিছু সহজ বিষয় যা কিনা বাথরুম তৈরির সময় বাদ পরে যায়। এই সমস্ত বিষয় খেয়াল করলে আর ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না এবং খরচের পরিমাণও অনেক কমে আসে। 

Write A Comment