বাড়ির মত বড় প্রপার্টি বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়াটা সবসময়েই কঠিন। আপনি প্রথমবারের মত বাসা বিক্রি করুন অথবা এ নিয়ে আপনার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকুক, বাড়ি বিক্রির পূর্বে নিজেকে মুখোমুখি হতে হয় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার। একটি বাড়ি বিক্রিতে যেমন প্রয়োজন বিভিন্ন আইনী বিষয় সামাল দেয়া ঠিক তেমনি নিজের বাড়ির সাথে জড়িয়ে থাকে অসংখ্য স্মৃতি। এজন্য পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে যেসব কমন বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হয়, সেগুলোকে নিয়েই এই লেখা।
প্রশ্নাবলীঃ
“ঘুম থেকে উঠলাম আর ডিসিশন নিলাম যে বাসাটা বেচে দিব!” – বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া কখনই এত সহজ নয়। কারণ বাসা বিক্রি করে নতুন বাসায় উঠার জন্য কোন “পারফেক্ট সময়” নেই। আপনি এখন যে বাসাটিতে আছেন সেটিকে গুছিয়ে তুলতে আপনাকে প্রচুর সময়, শ্রম ও চিন্তা খরচ করতে হয়েছে, চাইলেই হুট করে একে ছেড়ে যাওয়া যায় না। তবে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রেখে আপনার পরিবারের জন্য একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত সঠিক সময়ে।
আর সে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বিবেচনা করুন এই প্রশ্নগুলি –
- বাসা বিক্রি করার উৎকৃষ্ট সময় কোনটি?
- বাড়িটি বিক্রি করতে কেমন সময় লাগবে?
- বাড়ির উপযুক্ত দাম কত?
- বিক্রি সংক্রান্ত কেমন খরচাদি রয়েছে?
- বিক্রির জন্য সব কাগজপত্র রেডি আছে কি?
- বিক্রির জন্য কি রিয়েল এস্টেট এজেন্টদের সহায়তা নেয়া উচিত?
এ প্রশ্নগুলি নিজেকে করে যদি ঠিক ঠিক উত্তর পান, তাহলে আপনি বাসা বিক্রি করতে প্রস্তুত। কিন্তু কেমন হওয়া উচিত এ প্রশ্নগুলির উত্তর?
সময় সংক্রান্তঃ
প্রথমত, বছরের কোন নির্দিষ্ট সময় নেই যখন বাসার দাম বাড়ে বা কমে। কারণ রিয়েল এস্টেট প্রপার্টি আর দশটি প্রপার্টির মত না। যেমন ঈদের সময় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ে, টুরিস্ট সিজনে টুরিস্ট স্পটগুলির চাহিদা বাড়ে। কিন্তু এমন কোন ফিক্সড সময় নেই যখন প্রপার্টির দাম নিশ্চিতভাবে বাড়বে।
তবে, দেখা যায় যে ব্যাংক লোন এবং অন্যান্য বিষয়ের কথা মাথায় রেখে গ্রীষ্মকাল এবং জুন-জুলাই বাড়ি বিক্রির জন্য বেশ ভাল একটি সময়। তবে অবশ্যই এটি স্থানভেদে আলাদা হয়। উপযুক্ত সময় নির্ভর করবে আপনার প্রপার্টি কোন এলাকায় তার উপরে। আপনার প্রপার্টি যে এলাকায় সে এলাকায় এখন প্রপার্টির চাহিদা কেমন সেটিই নির্ধারণ করে দেবে আপনার প্রপার্টির দাম।
এরপর আসে কতসময় প্রয়োজন বাড়ি বিক্রির জন্য সে বিষয়টি। খুব সামান্য জিনিসও বাজারে দেখা যায় দিনের পর দিন পড়ে আছে, বিক্রি হচ্ছে না। সে তুলনায় বাড়ি তো বিশাল জিনিস! এজন্যই বাড়ি বিক্রির পূর্বে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত যে এটি বিক্রি হতে বেশ কিছুটা সময় লাগতে পারে।
দাম নির্ধারন এবং আনুষাঙ্গিক খরচাদি
আপনার বাড়িটি হয়ত আপনার কাছে অমূল্য, কিন্তু যিনি বাড়িটি কিনতে আগ্রহী অর্থাৎ ক্রেতা, তাঁর কিন্তু নির্দিষ্ট একটি বাজেট রয়েছে। তিনি স্বাভাবিকভাবেই সেই বাজেটের মধ্যেই বাড়ি খুঁজবেন। তাই বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেবার আগেই নিশ্চিত করুন কত দামে আপনি আসলে বাড়িটি বিক্রি করতে চাচ্ছেন? এই দাম নির্ধারন করাও বেশ জটিল একটি প্রক্রিয়া। তবে আশপাশে খোঁজখবর নিয়ে এবং যাচাইবাছাই করে দাম নির্ধারন করুন। লোকেশন, বাসার কন্ডিশন, এলাকাতে বাসার চাহিদা কেমন, এমন বেশ কিছু ফ্যাক্টর নির্ধারন করে আপনার বাসার দাম কেমন হবে সে বিষয়টি।
দাম নির্ধারনের সময় মাথায় রাখুন আনুষাঙ্গিক খরচাদির বিষয়টিও। আনুষাঙ্গিক খরচের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে বাসার সংস্কারের বিষয়টিও। ক্রেতা নিশ্চয়ই ভাঙ্গা বা অসম্পূর্ণ বাসা কিনতে রাজি হবেন না? তাই বিক্রির পূর্বে আপনাকেই বহন করতে হবে সব ধরণের সংস্কারের খরচাদি।
অন্যান্য
আপনার প্রপার্টি কি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কেনা হয়েছিল? যদি হয়ে থাকে সেই হোমলোন কি সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ করে ব্যাংক থেকে ছাড়পত্র নেয়া আছে? অথবা আপনার এই প্রপার্টি মর্টগেজ (বন্ধক) রেখে কোন লোন নেয়া নেই তো? কেননা আইনত বন্ধককৃত সম্পত্তির মালিকানা হাতবদল করা যায় না। এছাড়া বাড়ি বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টশন কিন্তু বাড়ি বিক্রির পূর্বে নিজেকেই প্রস্তুত করে রাখতে হয়।
বাসা বিক্রি কোন ছোট বিষয় নয়। সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা অনেক ধৈর্য্যের ব্যাপার। তাই এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াকে যদি অতিরিক্ত জটিল বলে মনে হয় তাহলে সাহায্য নিন রিয়েল এস্টেট এক্সপার্টদের। বিপ্রপার্টি.কম এর মত ৩৬০০ রিয়েল এস্টেট সার্ভিস প্রোভাইডার আপনাকে বাসা বিক্রি সংক্রান্ত সবধরণের সাপোর্ট দিতে সক্ষম। খুবই যৌক্তিক সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে তারা আপনার প্রপার্টি বিক্রির সব রকমের দায়িত্ব নিয়ে নেয়।