Reading Time: 3 minutes

শীত এসেই গেলো। সেইসাথে এসে গেলো লেপ-কম্বলের আদুরে ওমে আড়মোড়া ভাঙার সকাল। শীত মানেই যেন লেপের সাথে বন্ধুত্ব, কম্বলের সাথে সখ্য। তবে লেপ-কম্বলও হয় নানান প্রকারের। শীতের মাত্রা বুঝে, ব্যবহারকারীর চাহিদা বুঝে তৈরি হয় বিভিন্ন রকমের লেপ-কম্বল। সেসবের আলোকেই এই ব্লগে জানাচ্ছি লেপ-কম্বলের রকমফের কেমন হয়, কেন হয়। 

উষ্ণতায় চাই লেপ-কম্বল 

বিভিন্ন রকম লেপ-কম্বল এর উদ্দেশ্য তো একই, শীত দূরীকরণ বা তাপানুকূলতা সৃষ্টি। কিন্তু এর আকারে, আয়তনে, পুরুত্বে, ম্যাটেরিয়ালে, স্টাইলে আছে প্রচুর ভিন্নতা। প্রথমে বিভিন্ন রকমের লেপ-কম্বল এর কথা জানার পর খানিকটা বিভ্রান্ত লাগতেই পারে। কিন্তু কোনটি কেন ব্যবহৃত হয় তা জেনে রাখলে সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়ে যায় অনেক।  

থ্রো ব্ল্যাংকেট 

থ্রো ব্ল্যাংকেট
সোফায় বসে সিনেমা দেখার এক পাশে বড়জোর গায়ে টেনে নিতে পারেন থ্রো ব্ল্যাংকেট

প্রথমেই বলছি থ্রো ব্ল্যাংকেটের কথা। অনেকেই হয়তো একে বিভিন্ন রকম লেপ-কম্বল এর কাতারে ফেলতে চাইবেন না। কিন্তু সত্যি হলো, থ্রো ব্ল্যাংকেট উষ্ণতা তো খানিকটা দেয়ই। তবে শীত তাড়াতে থ্রো ব্ল্যাংকেট ঠিক উপযোগী নয়। বরং লিভিং রুম ডেকোর পিস হিসেবেই এর চাহিদা বেশি। সোফায় বসে সিনেমা দেখার এক ফাঁকে বড়জোর গায়ে টেনে নিতে পারেন এটি। যেহেতু সাজসজ্জার অনুষঙ্গ হিসেবেই এর চাহিদা বেশি তাই বিভিন্ন রঙয়ের থ্রো ব্ল্যাংকেট পাবেন বাজারে। সাধারণ লেপ-কম্বলের তুলনায় এটি আকারেও ছোট।  

ফ্লিস ব্ল্যাংকেট বা পশমি কম্বল 

পশমি কম্বল
বিভিন্ন ধরনের লেপ-কম্বল এর মধ্যে পশমি কম্বলের জনপ্রিয়তাই বেশি

বিভিন্ন ধরনের লেপ-কম্বল এর মধ্যে পশমি কম্বলের জনপ্রিয়তাই বেশি। আমাদের অনেকের বাড়িতেই এই ধরনের ব্ল্যাংকেটের দেখা পাওয়া যায়। পশমের তৈরি তুলতুলে নরম এই কম্বল আমাদের দেশের শীতকালের তাপমাত্রার সাথে বেশ মানানসই। উষ্ণ ও আরামদায়ক তো বটেই, সেইসাথে এই কম্বল দামেও সাশ্রয়ী আর পাওয়া যায় সব জায়গায়। 

কুইল্ট বা কাঁথা 

কুইল্ট
কাপড়ের একাধিক পরত একসাথে জোড়া দিয়ে তৈরি হয় কাঁথা

আমাদের ঐতিহ্যবাহী কাঁথাই মূলত কুইল্ট। সাধারণত সুতি কাপড় দিয়েই কাঁথা তৈরি হয়। কাপড়ের একাধিক পরত একসাথে জোড়া দিয়ে তৈরি হয় কাঁথা। দেশে দেশে এই কাঁথাও বিভিন্ন রকমের হয়, তবে বেশিরভাগ জায়গায় এটি গৃহসজ্জার অংশ। বাংলাদেশের কাঁথাও বৈচিত্রপূর্ণ, বিশেষত এর নকশার জন্য। কাঁথার পুরুত্বেও বেশ বৈচিত্র্য দেখা যায়। তবে এগুলো সাধারণত হালকা ধাঁচের হয় বলে সারা বছরই ব্যবহার করা যায়। 

কম্ফোর্টার 

কম্ফোর্টার
কম্ফোর্টার বালিশের কাভার ও চাদরের সাথে মিলিয়ে কেনা যায়

বিভিন্ন রকম লেপ-কম্বল এর মাঝে পুরু ও তুলতুলে ধাঁচের ব্ল্যাংকেট গুলো কম্ফোর্টার নামে পরিচিত। বিভিন্ন ধরনের লেপ-কম্বল এর মধ্যে কম্ফোর্টার দেশীয় শীতের জন্য দারুণ উপযোগী। এতে পলেস্টার কাপড়ের আবরণের ভেতরে থাকে তুলা ও পলেস্টারের সংমিশ্রণ। এরপর এটি এমনভাবে সেলাই করা হয় যাতে তুলা-পলেস্টারের মিশ্রণ সমানভাবে এতে ছড়ানো থাকে। বেডিংয়ের পুরো সেট কিনলে সঙ্গে কম্ফোর্টার পাওয়া যায়। অর্থাৎ কম্ফোর্টার বালিশের কাভার ও চাদরের সাথে মিলিয়ে কেনা যায়। 

ডুভে 

ডুভে খানিকটা পাতলা ধাঁচের আর সেলাইবিহীন

ডুভে ও কম্ফোর্টারে পার্থক্য কমই। তবে ডুভে খানিকটা পাতলা ধাঁচের আর সেলাইবিহীন। ডুভে’তে সাধারণত কাভার ব্যবহার করা হয়, ফলে এগুলো পরিষ্কার করা সহজ। কাভার পাল্টানোর সুবিধা থাকায় যেকোনো বেডরুমের সাজসজ্জার সাথেই মানানসই করে নেয়া যায় ডুভে। 

ওয়েটেড ব্ল্যাংকেট 

অন্যান্য ব্ল্যাংকেটের মতো শুধু উষ্ণতা দেয়াই ওয়েটেড ব্ল্যাংকেটের উদ্দেশ্য না। এর মূল উদ্দেশ্যই মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করা। এর ভার শরীরের কিছু অংশে চাপ দেয়, যা ব্যবহারকারীর মনে প্রশান্তির ভাব সৃষ্টি করে। যাদের এডিএইচডি বা অ্যাটেনশন ডেফিশিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার আছে, তাদের ডিপ টাচ প্রেশার থেরাপি বা ডিটিপি’র জন্য এটি দারুণ উপযোগী। যাদের ইনসমনিয়া আছে, তাদের জন্যও ওয়েটেড ব্ল্যাংকেট আরামদায়ক। ব্যবহারকারীর উচ্চতা, ওজন, বয়সের সাথে মানানসই ওয়েটেড ব্ল্যাংকেট বেছে নিতে ভুলবেন না। 

শীতকালে উষ্ণতার খোঁজে লেপ-কম্বলে নিজেকে মোড়ানোর আরাম সত্যিই অতুলনীয়। তাই বিভিন্ন রকম লেপ-কম্বল নিয়ে আপনার যত প্রশ্ন আছে, তা আমাদের জানান কমেন্টস বক্সে।

Write A Comment