Reading Time: 3 minutes

ব্যস্ততা থেকে অবসর নিয়ে একটু ভিন্ন কিছু করলে কেমন হয়? পরিবার প্রিয়জন নিয়ে একটু আলাদা কিছু সময় কাটাতে এই সাইবেরিয়ান হাস্কি ক্যানেল হতে পারে সেরা একটি ঠিকানা। নিরিবিলি প্রকৃতিতে নতুন বন্ধুদের সাথে কিছু সময় কাটানো যেন এক বিরাট প্রাপ্তি। বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে কে না ভালোবাসি? আর এই বন্ধু যদি হয় আদুরে নরম সরম কিউট একটা পাপী? এত চমৎকার সুযোগ কেউ কখনও হাতছাড়া করবে বলে মনে হয় না। তাই আর দেরি না করে আমরাও চলে এসেছি বন্ধুসুলভ সাইবেরিয়ান হাস্কি ক্যানেলে। যেখানেআমরা ঘুরে দেখব কেমন করে আছে এই মিষ্টি বন্ধুরা? আর জানবো আপনি কিভাবে সে খানে সময় কাটাবেন, খাওয়া-দাওয়া করবেন এবং ফিরে আসবেন।   

অনেকেই আছি আমরা যারা কিনা বাসায় পেট রাখতে ভালোবাসি। এই পেট এর আদর যত্ন দেখাশোনা সবকিছুই আলাদা। আমরা দেশ বিদেশ, এই বাসা থেকে ঐ বাসা যেখানেই আমরা যাই না কেন পেট যেন থাকে নিশ্চিন্তে আর আরামে। এমনই কিছু টিপস আছে পেটস নিয়ে বাসা বদলের জন্য। আপনি যদি প্রথম কুকুর পোষ্য নেবার কথা ভাবছেন সেক্ষেত্রে “সাইবেরিয়ান হাস্কি” ওতটা ভালো অপশন নাও হতে পারে। এরা পোষ মানতে বেশ সময় নেয়, কিন্তু পোষ মেনে গেলে এদের থেকে প্রিয় বন্ধু যেন আর কেউ না। আমরা অনেকেই কুকুর পোষ মানানোর ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না। সুতরাং এমন কুকুর খুঁজে নিতে হবে যে কিনা সহজে এবং দ্রুত পোষ মেনে যায়।

হাস্কি
সবচেয়ে যে দুষ্ট সে এপ্রিল!

সাইজে এরা মাঝারি আকৃতির আর ঘন লোমের হয়ে থাকে বলেই এতটা কিউট আর জনপ্রিয় তারা। কিন্তু চেহারায় তাদের সাইবেরিয়ান নেকড়ের আদল ফুটে উঠে বলে অনেকে আবার এদেরকে ভয় পায়। কিন্তু এদের সৌন্দর্য আর বুদ্ধি দীপ্ত চেহারার কারণে সাধারণ মানুষ থেকে আরম্ভ করে শিল্পী, লেখক, চলচ্চিত্র পরিচালকসহ সব ধরণের মানুষের কাছেই সমান আকর্ষণীয় এরা৷

সদর দরজা খুলতেই আপনাদের আমন্ত্রণ জানাতে ছুটে আসতেও পারে, আর্গস, মায়া, এরিয়াল, ব্রাউনিসহ সবচেয়ে যে দুষ্ট এপ্রিলটাও। এদের খুনসুটি আর খেলাধুলা দেখলে মনে হবে অন্য এক এক দুনিয়ায় এসেছি না তো। এত আদর আর মায়ার এই পৃথিবী সত্যি অতুলনীয়। এই হাস্কি ক্যানেলে যত মানুষ দেখে এই সব নিরীহ প্রাণীরা তারা যেন আরও আনন্দে আরও অস্থির হয়ে উঠে। কখন খাঁচা থেকে বেড় হবে কখন দৌড়বে। এই জন্যই হয়তো বোল্ট, এইস, বাটারকাপকে যেন, কোনভাবেই খাঁচায় রাখা যাচ্ছে না। দর্শনার্থীদের আদর আর ভালোবাসায় সিক্ত এই এক ঝাঁক সাইবেরিয়ান হাস্কি।

কুকুর
অনেকটা নেকড়ের মত নিলচে-বাদামি চোখের হয়ে থাকে কিন্তু একটু সময় দিলে হয়ে ওঠে আদুরে কোন বন্ধু

এই কিউট প্রানীগুলো শীতের দেশের বাসিন্দা হলেও এখানকার আবহাওয়াতে বেশ মানিয়ে নিয়েছে। এখানকার সবচেয়ে সুন্দর আদুরে আর প্রিয় হচ্ছে এপ্রিল। আপনি যখনই আসুন না কেন এপ্রিলের সাথে খেলার কথা ভুলবেন না যেন। তুলতুলে হেলে দুলে হাঁটা এই এপ্রিল সবার মন জয় করে রেখেছে। সব হাস্কিগুলো কিন্তু আবার এমন কিউট বা আদুরে নয়। কিছু আছে দেখতে অনেকটা নেকড়ের মত নিলচে-বাদামি চোখের এরা কাছে আসলে একটু ভয় ভয় ই লাগার কথা। কিন্তু একটু সময় পার করলে এই প্রানীগুলো রূপ নেবে প্রিয় বন্ধুর। 

সাইবেরিয়ান হাস্কি ক্যানেল?  

ধলেশ্বরী নদীর তীরেই প্রায় সাড়ে ৪ একর জমির উপরে গড়ে উঠে এই সাইবেরিয়ান হাস্কি ক্যানেল। কেবল পোষার উদ্দেশ্যে ২টি হাস্কি নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও এখনকার সংখ্যাটা বেশ বড়ই। প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা শেডের নিচে রয়েছে বসার ব্যবস্থা। একটু দূরেই নদী। জ্বি, হ্যাঁ! ধলেশ্বরী নদী। সপরিবার নিয়ে ঘুরে যেতে পারেন এখান থেকে। যাতায়াত বা খাবার ব্যবস্থা কোন কিছুরই যেন অভাব নেই এখানে। হাস্কিদের সাথে সময় কাটাতে কাটাতে যদি ক্ষুধা লেগে যায়, দুপুরের লাঞ্চ সেরে নিতে পারেন ক্যাফে রিভাইভ থেকে।  মানসম্মত ও মজাদার খাবারের ব্যবস্থা আছে ঘুরতে আসা সব টুরিস্টদের জন্য। রবিবার বাদেও, সকাল ৮ টা পর্যন্ত হাস্কিদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ থাকে টুরিস্টদের। এন্ট্রি ফী মাত্র ২০০ টাকা। এত সুন্দর সময় কাটাবার পয়সা কিন্তু মাত্র ২০০ টাকা। এটা তো গেল ভেতরের খরচ। এবার হলো বাইরের খরচ। সবার তো আর নিজেদের গাড়ি নেই। তাদের কথা ভেবেই রাখা হয়েছে, সাইবেরিয়ান হাস্কির নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা। এই পরিবহন ব্যবস্থা পেতে এক সপ্তাহ আগে থেকেই বুকিং দিতে হবে। নয়তো বা গাড়ি নাও পেতে পারেন। যাওয়া আসার খরচ পড়বে ৬০০ টাকা। সবকিছুতো প্রায় জেনেই গেলেন এখন শুধু বাকী ঠিকানাটা। লোকেশনে পোঁছানোর সুবিদার্থে, এখানে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ রুট হচ্ছে, সাভারের-হেমায়েতপুর দিয়েই। সিঙ্গাইর ব্রিজ আর হয়ে, গাড়ি, সিএনজি বা ব্যাটারি চালিত রিকশায় ফোর্ডনগর এলাকায় পৌঁছে, পেন্টা গ্রুপের সামনেই চোখে পড়বে সাইবেরিয়ান হাস্কি ক্যানেল।

শেষ বিকেলের কনে দেখা আলোয়, ঠাণ্ডা হীম বাতাসে- চারপাশটা এখানে সত্যি অসাধারণ। ক্যানেলে এই হাস্কিদের ছেড়ে, বাড়ি ফেরার পথে, আশেপাশে কর্মব্যস্ত মানুষের জীবন দেখতে পারাটাও-আনন্দের। দূর থেকে যতদূর চোখ যায়, মাইলের পর মাইল সবুজে ঘেরা, এই স্বর্গীয় হেমায়েতপুর, বসবাসের জন্যও কিন্তু সেরা। হাস্কিদের প্রতি আপনার ইন্টারেস্ট কেমন সেটা জানাতে ভুলবেন না যেন। কবে যাচ্ছেন সেখানে? বা কেমন লাগলো এই লেখাটি জানাতে যেন ভুলবেন না। 

1 Comment

Write A Comment