গ্রীষ্মকাল শুরুর সাথে সাথেই তাপমাত্রায় বেশ বড় ধরনের পরিবর্তন অনুভব করা যায়। তীব্র তাপদাহের এ সময় ঘরের বাইরে সময় কাটানো বেশ কষ্টকরই হয়ে ওঠে। তবে ঘরের বাইরের মতো অবস্থা যেন ঘরের ভেতরেও অনুভূত না হয়, সে জন্য গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস সম্পর্কে জেনে, সে অনুযায়ী ঘরে ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন আনা যেতে পারে। এসি সার্ভিসিং, ঘরে গাছ রাখা, এনার্জি সেভিং লাইট ব্যবহারের মতো ছোটখাট কিছু পরিবর্তন আনলে ঘরের ভেতরের তাপমাত্রার পরিমাণ হবে সহনীয়। তবে চলুন গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস গুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক আজকের ব্লগ থেকে।
গরমের শুরুতেই কিনে ফেলুন এসি

গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস হিসেবে, বিনিয়োগ করে ফেলুন এসি কেনায়। গরমের এই সময় অসহনীয় তাপের তীব্রতা থেকে মুক্তি পেতে গ্রীষ্মের শুরুতেই কিনে ফেলুন এসি। গরমে তাপমাত্রার তীব্রতা যেহেতু বেশি থাকে, তাই আউটডোরে ঘোরাঘুরির চেয়ে ইনডোরে সময় কাটাতেই বেশিরভাগ মানুষ পছন্দ করেন। আর তাই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস এর মধ্যে সবার প্রথম প্রাধান্য পায় এসি কেনার বিষয়টি। আর এ কারণে এয়ার কন্ডিশনারের খুঁটিনাটি সম্পর্কে জেনে নেয়া জরুরি।
দেয়াল জুড়ে হালকা রঙের ব্যবহার

গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপসের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি টিপস হল ঘরের দেয়াল জুড়ে হালকা রঙের শেড ব্যবহার করা। হালকা শেডের রঙ যেমন- সাদা, হালকা গোলাপি, নীল, বেগুনি এই রঙগুলোর ব্যবহার ঘরে প্রশান্তির আবহ ধরে রাখে। আর তাই গরমের তীব্রতায় ঘরের ভেতরের পরিবেশ শীতল রাখতে গাঢ় রঙের পরিবর্তে হালকা রঙ-ই বেছে নেয়া উত্তম।
ইন্টেরিয়র ডেকোর এর জন্য ঘর শীতল রাখার রঙ গুলো বেশ আরামদায়ক অনুভূতি দেয়। তাই শীতের রুক্ষতা এবং শুষ্কতা থেকে ঘরকে নতুন করে সাজাতে গ্রীষ্মের শুরুতেই অন্দরে আনতে পারেন চমৎকার এই পরিবর্তন। আইভরি বা সবুজের বিভিন্ন শেডের মতো নিউট্রাল রঙ থেকে শুরু করে বেইজ, ল্যাভেন্ডার, ওশেন ব্লু যেকোনোটিই অন্দরের দেয়ালে মানিয়ে যাবে বেশ ভালোভাবে। তবে কালো, নেভি ব্লু, মেরুন লাল এর মতো রঙগুলোকে অবশ্যই এড়িয়ে চলা উচিত।
ঘর জুড়ে গাছের ছায়া

তীব্র তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে গাছের বিকল্প কিছু হতেই পারে না। আর এখন যেহেতু ঘর সাজাতে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের প্ল্যান্টস ঘরের বিভিন্ন কোণে, ব্যালকনিতে রাখেন, তাই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস হিসেবে ইনডোর প্ল্যান্টস এর কোন বিকল্প নেই।
ফিলোডেনড্রন, প্যাথোস, পিস লিলি, স্নেক প্ল্যান্ট, ক্যাকটাস, বিভিন্ন প্রকার অর্কিড এর মতো প্ল্যান্টস একদিকে যেমন তাপমাত্রা কমিয়ে রাখতে সহায়তা করবে, অন্যদিকে ঘরের ইন্টেরিয়রে আনবে ভিন্নতা। আর এই প্ল্যান্টস রাখার জন্য বাহারি ডিজাইনের গাছের টব এর ব্যবহারও কিন্তু ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিবে। এই গাছগুলো ঘরের ভেতরের এবং বাইরের বাতাসে আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি সঠিক তাপমাত্রা ধরে রাখতেও সহায়তা করে।
ন্যাচারাল ফেব্রিক এর ব্যবহার
গরমের তীব্রতা থেকে আরাম পেতে প্রস্তুতির যেন কোন কমতি থাকে না। এসময়ে সিনথেটিক, সিল্ক এ ধরনের ম্যাটেরিয়াল এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের মতো কাজ। কেননা, এতে করে গরমে অস্বস্তি তেমন একটা অনুভব হবে না। আর তাই পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রেই নয়, বরং অন্দরে ব্যবহৃত কাপড় যেমন- পর্দা, সোফা এবং বেড কভার, সব কিছুর জন্যই বেছে নিতে পারেন কটন বা সুতির মতো ন্যাচারাল ফেব্রিক। সাধারণত সুতি কাপড় ‘সামার ফ্রেন্ডলি’ ফেব্রিক হিসেবে পরিচিত। আর তাই তো গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস হিসেবে সুতি ফেব্রিক এর ব্যবহার ঘরের জন্য হবে আরামদায়ক।
এনার্জি সেভিং লাইট এর ব্যবহার

অনেক ঘরের ভেতরেই প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের তেমন সুযোগ থাকে না। আর আলো প্রবেশ করলেও তা যথাযথ হয়ও না অনেক ক্ষেত্রে। আর তখনই কৃত্রিম আলো ব্যবহার করা হয়। তবে বাল্বের আলোয় ঘরের ভেতরটা কিন্তু বেশ গরমও হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে এলইডি লাইট ব্যবহারের ফলে ঘরের ভেতরে তাপ যেমন অনুভূত হয় না, তেমনি এলইডি লাইট বেশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ীও বটে। আর খরচের কথা চিন্তা করলেও কিন্তু এলইডি লাইট ব্যবহারের সুবিধাও বেশ। তাই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস হিসেবে বিভিন্ন ডিজাইনের ছোট-বড় আকৃতির এলইডি লাইট বেছে নিতে পারেন।
গ্রীষ্মের সময় যেহেতু শুরু হয়ে গিয়েছে, তাই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার টিপস সম্পর্কে এখনই জেনে নেয়া জরুরি। সহজ এই ৫টি টিপস অনুসরণ করে আপনি ঘরের ভেতরের বাড়তি তাপ যেমন কিছুটা হলেও কমিয়ে আনতে পারবেন, তেমনি তীব্র তাপদাহের দিনগুলোতেও ঘরের ভেতরটা হবে সহনীয়।