Reading Time: 5 minutes

বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট খাতে রোজ আসছে নানা সম্ভাবনা। অন্যান্য অনেক উন্নত দেশের মতো (যেখানে অর্থনীতি মূলত রিয়েল এস্টেটের বাজারের উপর নির্ভর) বাংলাদেশ রিয়েল এস্টেট খাতেরও সেই সম্ভাবনা রয়েছে যা অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু, যথাযথ অবকাঠামোর অভাবে প্রপার্টি নিয়ে কাজ করার প্রক্রিয়াটাকে করে তুলেছে আরও জটিল। আমরা এই সমস্যাটি উপলব্ধি করেছি, তাই প্রপার্টি সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান এনেছি একদম সবার হাতের মুঠোয়। সব ধরনের সেবা সকলের কাছে পৌঁছানোর ধারাবাহিকতায় বিপ্রপার্টি গত বছর চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করেছিল। আগে এই সার্ভিসগুলো কেবল ঢাকা পর্যন্তই সীমিত ছিল। এখন ঢাকার গন্ডি পেরিয়ে চট্টগ্রামেও চলে এসেছে বিপ্রপার্টি। কেমন ছিল চট্টগ্রামে বিপ্রপার্টির প্রথম বছর জানতে পড়তে থাকুন!

শুরুর দিনগুলো

বিপ্রপার্টির কর্মচারীরা
বাণিজ্যিক এবং আবাসিক প্রপার্টিগুলোর প্রচুর চাহিদা

প্রথম দিকের দিনগুলো আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং এবং উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। চট্টগ্রাম বেশ বড় একটি শহর। যেখানে বাণিজ্যিক এবং আবাসিক প্রপার্টিগুলোর প্রচুর চাহিদা আর এই হাজার হাজার মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজন সুগঠিত একটি টিম বা সিস্টেমের। সে কারণেই আমরা খুলশী এলাকায় আড়াই হাজার বর্গফুটের চমৎকার একটি অফিস নিয়ে চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করি। প্রপার্টি সংক্রান্ত সকল সার্ভিস থেকে শুরু করে প্রপার্টির লেনদেনও আমরা এক জায়গা থেকেই করে থাকি। আমাদের সম্মানিত ক্লায়েন্ট ও জনসাধারণের জন্য ৫০ জনের একটি টিম নিয়ে আমরা সব ধরনের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সময়ের সাথে ব্যবসা যেমন বেড়েছে তেমনি সামগ্রিক কাজের চাপ  সামলাতে বেড়েছে কর্মচারী সংখ্যা। একটি বছর সাফল্য নিয়ে পার হবার পর আমরা যেমন আত্মবিশ্বাসী তেমনি সামনের দিনগুলো আরও বেশি সুন্দর হবে এ নিয়ে আশাবাদীও। 

আমাদের প্রোজেক্টসমূহ 

এয়ার বেল
প্রপার্টিগুলো ভাড়া বা বিক্রয়ের জন্য মার্কেটিংও করে দিচ্ছি

আমাদের মূল লক্ষ্যই ছিল প্রপার্টি সংক্রান্ত পরিষেবাগুলো মানুষের কাছে সহজ করে নিয়ে যাওয়া। যাতে করে তারা সহজেই প্রপার্টিগুলো অ্যাক্সেস করতে পারে। সেই লক্ষ্যেই আমরা কেবল ক্ল্যায়েন্টদের কাঙ্ক্ষিত প্লট, কমার্শিয়াল স্পেস এবং অ্যাপার্টমেন্টগুলি খুঁজে পেতে সহায়তাই করছি না  বরং তাদের প্রপার্টিগুলো ভাড়া বা বিক্রয়ের জন্য মার্কেটিংও করে দিচ্ছি। চট্টগ্রামে এয়ারবেল ডেভেলপমেন্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের মত কোম্পানিগুলোর মার্কেটিং আমরা করে দিচ্ছি। এয়ারবেল হেলিয়ান্থাস, এয়ারবেল এমএফ টাওয়ার, এয়ারবেল পুল ভিউ এবং এয়ারবেল স্বপ্না ছায়া তাদের চারটি প্রোজেক্ট যা আমরা মার্কেটিং করে দিয়েছি ইতিমধ্যে। 

বিপ্রপার্টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া  

প্রোজেক্ট ভিউইং
সেই থেকে লিস্টিং এর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে

এখন চলুন চট্টগ্রামে বিপ্রপার্টির প্রথম বছর নিয়ে একটু আলাপ করা যাক। প্রপার্টির লিস্টিং, লিড জেনারেশন এবং ডেটার মাধ্যমে প্রপার্টি লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রোথের তিনটি দিক নিয়ে আলোচনা করব। প্রথম মাসে, নভেম্বর ২০১৯ সালে ৩০৯ টির মত প্রপার্টি ভাড়া ও বিক্রির জন্য যুক্ত হয়েছিল, রেসিডেন্সিয়াল এবং কমার্শিয়াল সব মিলে। সেই থেকে লিস্টিং এর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ২০২০ সালের জুলাই মাস ছিল বিপ্রপার্টি চট্টগ্রাম মার্কেট প্লেসের নবম মাস। এবং প্রথম মাস থেকে লিস্টিং সর্বমোট ৩৪৩.০৭% বেড়ে গিয়েছিল।  লিড জেনারেশনের ক্ষেত্রেও আমরা পেয়েছি বিরাট সাফল্য। ২০১৯ এর নভেম্বরে সর্বমোট লিড সংখ্যা ছিল ১১৬ রেসিডেন্সিয়াল এবং কমার্শিয়াল সব মিলে। পরে গিয়ে ২০২০ সালের অক্টোবরে সেই লিড বেড়ে ৮৩১ সংখ্যায় দাঁড়িয়েছে। যার মানে, কেবল একটি বছরের ব্যবধানে ৬১৬.৩৮% লিড বেড়ে গেছে। লিড এর সাথে বেড়েছে প্রপার্টির লেনদেনও। এক বছরের মধ্যে প্রপার্টির লেনদেনের সংখ্যা ১৪৪.৪৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত একটি বছর বেশ চমৎকার এবং ব্যবসাসফল ছিল। 

সাফল্যের গল্পগুলো 

গোটা বছরে  কঠোর পরিশ্রম এবং বিশ্বমানের পরিষেবা দিয়ে আমরা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা এটা বেশ ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারি যে প্রতিটা প্রপার্টির সাথে জড়িয়ে থাকে মায়া ও মমত্ব। সারা জীবনের কষ্টে অর্জিত টাকা বিনিয়োগ করেই তো এই প্রপার্টিগুলো নিজের করে নেওয়া হয়। তাই ক্লায়েন্ট ডিলিং এর সময় সহানুভূতি ও পারস্পরিক বোঝাপড়াটা বজায় রাখা আমাদের কাছে মুখ্য বিষয়!  আমাদের বিশ্বমানের সেবা দিয়ে আমরা জয় করে নিয়েছি ক্লায়েন্টদের আস্থা। “রিয়েল এস্টেট ব্রোকাররা একটা মনোভাব বেশ প্রবল ভাবে দেখিয়ে থাকে যে প্রপার্টি নিলে নিন না হলে আরও অনেক ক্লায়েন্ট আছে”! কিন্তু, বিপ্রপার্টির মত সংস্থাগুলো বেশ অন্যরকমভাবে কাজ করে থাকে, তারা আপনাকে নিজের পরিবারের মত করে আপ্যায়ন করে, সময় নিয়ে আপনার সাথে আলোচনা করে”।  ঠিক এমন ভাবেই বলেছিলেন  আমাদের চট্টগ্রামের ক্লায়েন্ট ফাতেমা হুসাইনের ছেলে।  আমাদের আর একজন সম্মানিত ক্লায়েন্ট তানিম এম শহীদ বলেন, বিপ্রপার্টির সাথে তার অভিজ্ঞতা ছিল বেশ ভালো- “সেখানের সেলস অ্যাডভাইজাররা অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণও নম্র এবং পরামর্শ বা গাইডলাইনের জন্য সবসময় পাশে থাকেন। এমনকি প্রয়োজনের সময় তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বেশ আন্তরিকভাবেই যোগাযোগ করেন। যা প্রপার্টি লেনদেনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়”। বিপ্রপার্টির সার্ভিস নিয়ে তিনি বেশ সন্তুষ্ট ছিলেন। এগুলোর মত আরও বেশ কয়েকটি চমৎকার সাফল্যের গল্প রয়েছে যেগুলো আপনি চাইলেই বিপ্রপার্টির ইউটিউব প্লে-লিস্টে দেখতে পারবেন।

ইভেন্ট এবং অ্যাকটিভেশন

REHAB fair Chattogram
অফিস ব্র্যান্ডিং এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় রয়েছে আমাদের উপস্থিতি

২০২০ সালের প্রায় শুরু থেকে লকডাউন থাকার কারণে আউটডোরে কোন ইভেন্ট আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। ফলস্বরূপ, বিপ্রপার্টির প্রথম বর্ষের কোন উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট এবং কার্যক্রম ছিল না তবে বছরটিতে প্রপার্টির লেনদেন ঘটেছে বেশ সক্রিয়ভাবে। এরারবেলের ৪ টি প্রোজেক্টের জন্য আমরা সাইড ব্র্যান্ডিং করে দিয়েছি। এছাড়াও, ২০২০ সালের চট্টগ্রামের রিহ্যাব ফেয়ারটি ছিল বেশ সাফল্যময়। আমাদের স্টলে গ্রাহকদের অপ্রতিরোধ্য উপস্থিতি সেই সাফল্যেরই জানান দেয়। সকলে একে একে করে আসতে থাকে আমাদের এ্যাডভাইজারদের কাছে পরামর্শ নিতে থাকে। আমরা অফিস ব্র্যান্ডিং এবং প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমেও সকলের কাছে আমাদের উপস্থিতি  আরও দৃশ্যমান করে তুলেছি। 

কেমন হতে যাচ্ছে আগামী দিনগুলো

বিপ্রপার্টির ইন্টেরিয়র সার্ভিস
চট্টগ্রামে বিপ্রপার্টির সামনের দিনগুলোও বেশ সম্ভাবনাময়

বিপ্রপার্টি বেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকদের চাহিদা পূরণের জন্য সবসময়ই কোন না কোন নতুন সার্ভিস চালু করেই যাচ্ছে। আমাদের ইন্টেরিয়র সল্যুশন তারই উদাহরণ। গ্রাহকদের চাহিদামত এবং বাজেটে ঘরের ইন্টেরিয়র ডিজাইন করে দেওয়ার সার্ভিস নিয়েই চালু হয়েছে বিপ্রপার্টি  ইন্টেরিয়র। পে-রেন্ট বিপ্রপার্টির আর একটি সার্ভিস। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় ভাড়া সংক্রান্ত যে সকল সমস্যা দেখা দেয় সেগুলো সমাধান করতেই পে-রেন্ট সার্ভিসটি আনা হয়েছে। উদাহরণে বলা যায়, ভাড়া দেয়ার একাধিক প্রপার্টি থাকলে আপনাকে ম্যানুয়ালি ভাড়া আদায় করতে কোনও সময় ব্যয় করতে হবে না। পে-রেন্ট এর মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে ঝামেলা ছাড়াই ডিজিটালি ভাড়া দিতে পারবেন। চট্টগ্রামে বিপ্রপার্টির প্রথম বছর বেশ ব্যবসা সফল ছিল। এবং এখন পর্যন্ত সমস্ত উদ্যোগ বিবেচনা করে চট্টগ্রামে বিপ্রপার্টির সামনের দিনগুলোও বেশ সম্ভাবনাময়। 

চট্টগ্রামের রিয়েল এস্টেট খাতের বর্তমান ভবিষ্যৎ এবং বিপ্রপার্টির উপস্থিতি নিয়ে এই ছিল আমাদের ছোট একটি ওভারভিউ। দেশের একমাত্র ৩৬০ ডিগ্রি রিয়েল এস্টেট সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সব এলাকার সব ধরণের রিয়েল এস্টেট নিয়েই আমাদের কাজ। তাই চট্টগ্রামের রিয়েল এস্টেট নিয়ে আরও জানার থাকলে আমাদেরকে জানাতে পারেন কমেন্ট সেকশনে, ভিজিট করতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইটে

Write A Comment