Reading Time: 2 minutes

২০২১ সালের ০৮ সেপ্টেম্বর,  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন তেজগাঁও এর বহু প্রতীক্ষিত ভূমি ভবন কমপ্লেক্স। ভূমি সম্পর্কিত সমস্ত অফিস এর কার্যক্রম এখন থেকে এই ভূমি ভবনেই পরিচালিত হবে। এর আগে এ সকল  অফিস শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত ছিল বলে, ভূমি সংক্রান্ত সরকারি যেকোনো কাজেই সাধারণ জনগণকে বারবার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়  ঘুরতে হতো। আর এই সমস্যাটির কথা বিবেচনায় নিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ভূমি ভবন কমপ্লেক্স। ফলে এখন থেকে কাউকে আর এসব দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। সময় এবং শ্রম বাঁচিয়ে বেশ সহজেই ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজ সম্পন্ন করা যাবে। নতুন এই কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে, সরকার কেবল একটি একীভূত কাঠামো তৈরির প্রক্রিয়াই শুরু করেনি, বরং দীর্ঘদিন পর সময়োপযোগী এ উদ্যোগ সাধারণ মানুষের কাছেও হয়েছে প্রশংসিত।  নতুন ভূমি ভবন কমপ্লেক্স  সম্পর্কে আরো জানতে পড়তে থাকুন।

ভূমি ভবন কমপ্লেক্স

ভূমি ভবন
ভূমি ভবন কমপ্লেক্স ১৩ তলা বিশিষ্ট বিশাল একটি ভবন

নবনির্মিত ভূমি ভবন কমপ্লেক্স থেকে বাইরে তাকালেই চোখে পড়বে মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভার এর তেজগাঁও-এর অংশ, কারওয়ান বাজার ও তেজগাঁও শিল্প এলাকা এবং ভবনের অন্য পাশ থেকে দেখা যাবে নয়নাভিরাম হাতিরঝিল হ্রদ। ভূমি ভবন কমপ্লেক্স ১৩ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন, যেখানে রয়েছে ৩২,২০০ বর্গ মিটার বিস্তৃত বিশাল দুটি বেসমেন্ট। ২০১৪ এর পর মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একই ছাদের নিচে রাখার নির্দেশ দেন এবং সে অনুযায়ী বহুতল এই ভবনটির নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়। অবশেষে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ১৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই ভূমি ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

ভূমি ভবন নির্মাণের উদ্দেশ্য 

কিছুদিন আগেও ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেকোনও এজেন্সি বা বিভাগ থেকে ভূমি-সংক্রান্ত পরিষেবার প্রয়োজন হলে একটি দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হতো আলাদা আলাদাভাবে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াতে হতো। তবে, ভূমি ভবন নির্মাণের সাথে সাথে এই সমস্ত ঝামেলা এবং ভোগান্তির অবসান ঘটেছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী, এই নবনির্মিত ভূমি ভবন কমপ্লেক্সের মূল উদ্দেশ্য হল ভূমি-সংক্রান্ত পরিষেবার জন্য “ওয়ান স্টপ-সার্ভিস” হাব হিসেবে কাজ করা। এই প্রক্রিয়ার  মাধ্যমে, এখন ভূমি সংক্রান্ত পরিষেবা পেতে আসা মানুষগুলোর সামগ্রিক ঝামেলা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিভাগ ও সেবাসমূহ 

ভূমি ভবনে আসলে সংশ্লিষ্ট যে বিভাগগুলো থেকে আপনি পরিষেবা পাবেন- 

  • ভূমি মন্ত্রণালয় 
  • ভূমি রেকর্ড ও সার্ভে বিভাগ
  • ভূমি সংস্কার বোর্ড
  • ভূমি আপিল বোর্ড
  • ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

ভূমি ভবন কমপ্লেক্স থেকে যে পরিষেবাগুলো আপনি পাবেন-  

  • মিউটেশন পরিষেবা (এখন অনলাইনে মিউটেশন খতিয়ান সংক্রান্ত আবেদন করা যাবে)
  • ভূমি উন্নয়ন কর সেবা
  • খাস জমি বন্দোবস্ত পরিষেবা
  • অর্পিত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা পরিষেবা
  • সাইরাত মহল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস
  • অন্যান্য জমি-সংক্রান্ত পরিষেবা (আদিবাসীদের জন্য পরিষেবা, ভূমির বিভাগ পরিবর্তন ইত্যাদি)

সুযোগ-সুবিধা

অফিস এবং এজেন্সি সংক্রান্ত সুবিধা ছাড়াও, ভবনটিতে কর্মজীবী নারীদের সুবিধার্থে তাদের বাচ্চাদের জন্য একটি ডে-কেয়ার সেন্টারও রয়েছে। এই ডে-কেয়ার সেন্টারটি স্থাপনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রতিটি বাচ্চার জন্য চমৎকার ডে-কেয়ার সুবিধা প্রদান করা,যার ফলে তাদের বাবা-মায়েরা দিনের বেলা চিন্তামুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবে। ভবনটি পরিবেশবান্ধব হবে, এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে এবং এমনভাবে নির্মিত হয়েছে, যাতে এখানে একটি স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট সিস্টেম নিশ্চিত করা যায়। এর ফলে এই ভবনটি আশেপাশের এলাকায় কম ক্ষতিকর পদার্থ নিঃসরণ করবে। এছাড়াও, ভূমি ভবন কমপ্লেক্সে একটি বঙ্গবন্ধু কর্নারও রয়েছে যেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। যা আমাদেরকে তাঁর দর্শন, দৃষ্টিভঙ্গি এবং আদর্শ স্মরণ করিয়ে দেয়।

ভূমি সংক্রান্ত সমস্যাগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নতুন কিছু নয়। জমির ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে সাথে ভবিষ্যতেও সেই সমস্যাগুলো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণেই, এ সমস্ত সমস্যা মোকাবেলায় একটি একীভূত কাঠামোর প্রয়োজন এখন অনেক বেশি। এবং নবনির্মিত এই ভূমি ভবন কমপ্লেক্স হচ্ছে, সেই সমস্যা সমাধানের প্রথম পদক্ষেপ। 

Write A Comment

Author