Reading Time: 2 minutes

সম্পত্তির মালিকানা বিনিময় করার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপায়। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন আনুযায়ী, প্রয়োজনীয় দলিলপত্র বিনিময়ের জন্য প্রতিটি প্রপার্টি নিবন্ধন করা প্রয়োজন। সম্পত্তির মালিকানা বিনিময় করার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপায়। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন আনুযায়ী, প্রয়োজনীয় দলিলপত্র বিনিময়ের  মাধ্যমে প্রতিটি প্রপার্টি নিবন্ধন করা প্রয়োজন। তবে বিনিময় প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে দলিল আলাদা হতে পারে। যেমন ধরুন, যদি কেউ একটি সম্পত্তি ক্রয় করতে চায়, তবে তাকে সাফ-কবলা দলিল প্রস্তুত করতে হবে। তবে আপনি যদি মুসলমান হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার কাছে ধর্মীয় মূল্য আছে এমন যেকোনো জিনিস যেমন- জায়নামাজ, তসবিহ বা পবিত্র কোরআন বিনিময়ের মাধ্যমে আপনার সম্পত্তি দান করার ব্যবস্থা রয়েছে। ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী এই বিনিময় প্রক্রিয়াকে হেবাবিল-এওয়াজ বলা হয়। তবে, অন্য যেকোনো দলিলের মতো, হেবাবিল-এওয়াজ দলিলের সাথে কিছু নির্দিষ্ট ফি যুক্ত রয়েছে। আজকের ব্লগে, আমরা হেবাবিল-এওয়াজ দলিলের নিবন্ধন ফি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। 

হেবাবিল এওয়াজ দলিল

ইসলামিক আইন অনুসারে হেবাবিল এওয়াজ দলিল হল এমন এক ধরনের দলিল যেখানে মুসলমান ধর্মের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেমন- পবিত্র কোরআন, জায়নামাজ, তসবিহ, স্বর্ণের গহনা, দেনমোহরের টাকা ইত্যাদির বিনিময়ে সম্পত্তির মালিকানা উপহার দেওয়া বা দান করা হয়। এতে করে প্রাপকের সম্পত্তি হস্তান্তর সহ নির্দিষ্ট সম্পত্তির উপর চূড়ান্ত ক্ষমতা থাকবে।

ইসলামিক আইন অনুযায়ী, সুস্থ মস্তিষ্কে  যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান স্বেচ্ছায় হেবাবিল এওয়াজ দলিলের মাধ্যমে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবেন। হেবাবিল এওয়াজের মাধ্যমে স্থানান্তরিত সম্পত্তি গুলোর জন্য কোনো অগ্রক্রয়ের  অধিকারের প্রয়োজন নেই।

হেবাবিল এওয়াজ দলিলসহ বিভিন্ন ধরনের দলিল এই পাঁচটি তথ্য থাকা বাঞ্ছনীয়। এর মধ্যে রয়েছে- 

  • সম্পত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
  • বিক্রেতার বা দাতার সঠিক তথ্য বা পরিচয়
  • ক্রেতা বা গ্রহণকারীর পরিচয় বা সঠিক তথ্য
  • সাক্ষীর যথাযথ তথ্য বা পরিচয়
  • দলিলের সমাপ্তি নির্দেশ করে এমন একটি তারিখ

হেবাবিল এওয়াজ দলিলের নিবন্ধন ফি

হেবাবিল-এওয়াজ নিবন্ধন ফি
হেবাবিল-এওয়াজ এর নিবন্ধন ফি

যেমনটি আমরা আগেই উল্লেখ করেছি, প্রত্যেক ধরনের দলিলের সাথে কিছু না কিছু ফি রয়েছে। হেবাবিল এওয়াজ দলিলও এর ব্যতিক্রম নয়। হেবাবিল এওয়াজ দলিলের নিবন্ধনের প্রক্রিয়া চলাকালীন আপনাকে নিবন্ধীকরণ ফি ছাড়াও স্ট্যাম্প ফি, স্থানীয় সরকার কর দিতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের সময় আপনাকে কত টাকা দিতে হবে তার বিস্তারিত রয়েছে এখানে- 

রেজিস্ট্রেশন ফি- ১% (সম্পত্তির সর্বমোট মূল্যের বিপরীতে) 

স্ট্যাম্প শুল্ক– ১.৫০% (সম্পত্তির সর্বমোট মূল্যের বিপরীতে) 

স্থানীয় সরকার কর– সম্পত্তির সর্বমোট মূল্যের বিপরীতে ৩% (সিটি কর্পোরেশন এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর অধীন সম্পত্তি না হলে) 

২% (সিটি কর্পোরেশন এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর অধীন সম্পত্তি হলে) 

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমূহ  

উপরে উল্লিখিত ফি, কর ও শুল্ক সমূহ ছাড়াও প্রত্যেকটি দলিলের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে নিম্নলিখিত শুল্ক ও ফি সমূহ প্রয়োজন হবে। 

১। ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা

২। ই-ফি বাবদ ১০০ টাকা

৩। এন-ফি 

  • বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা এর অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা।
  • ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা এর অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।

৪। (নকলনবিশগনের পারিশ্রমিক) এনএন ফি সমূহ-

  •  বাংলায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা এর অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
  •  ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ (তিনশত) শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা এর অংশ বিশেষের জন্য ৩৬ টাকা।

৫। সম্পত্তি হস্তান্তর নোটিশের আবেদনপত্রে ১০ টাকা মূল্যের কোর্ট ফি।

আর তাই, হেবাবিল এওয়াজ দলিলের সকল অতিরিক্ত চার্জ এবং রেজিস্ট্রেশন ফি সম্পর্কে জানতে আপনাকে অবশ্যই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। এমনকি সম্পত্তির মালিকানার সত্যতা যাচাই করার ক্ষেত্রে হেবাবিল-এওয়াজ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে উঠতে পারে। এ কারণে এই দলিল সম্পর্কে যথাযথ ধারণা থাকা এবং বিস্তারিত জানা অবশ্যই প্রয়োজন।   

Write A Comment

Author