রেডি অ্যাপার্টমেন্ট সাজানো বেশ আরামের। আগে থেকেই একটা আউটলাইন চোখে ভেসে ওঠে, সেই ঘরে যাবে ঝাড়বাতি আর ঐ ঘরে যাবে বাবার আলমারি। সহজেই ঘরটা কিন্তু সাজিয়ে নিলেন। কিন্তু হোম ডেকোরে নতুন কিছু না কিছু রোজ সংযোজন হবেই। আজ অ্যাকসেন্ট ওয়াল তো কাল সাদামাটা দেয়াল। আজকের যা হাল ট্রেন্ডি কাল তা পুরনো। এই সবকিছুর ভেতর যা একটু চ্যালেঞ্জিং তা নিয়েই আজকের আলাপ। যারা নতুন বাড়ি করছেন আর হোম ডেকোরে নতুন কিছু করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আজকের ব্লগ। অনেকেই হোম ডেকোরেশন কে নিয়ে গেছেন ভিন্ন মাত্রায়। শুধু দোকান থেকে আনুষাঙ্গিক কিনে এনে সাজালেই হিসেব চুকে যায় এমন আর নেই কিছু। কনস্ট্রাকশনের সময় থেকেই ভাবতে হবে যে কাজ শেষ হলে কেমন দেখাবে আপনার বাড়ি। কনস্ট্রাকশনের সময়ই কিছু কাজ করে নিতে হবে। চলুন জানা যাক কনস্ট্রাকশনের সময় ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন সেটআপ কী কী করা যায়!
ওয়াল ফিটেড ফার্নিচার
হোম ডেকোরে এই ওয়াল ফিটেড ফার্নিচারের বেশ সুনাম রয়েছে। এর মধ্যে কেবিনেট বিখ্যাত। আধুনিক বাসায় কেবিনেট ভালোবাসে না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কিছুটা কঠিন। যদিও এই কেবিনেটের সুবিধা ও অসুবিধা দুটোই আছে। কিন্তু কেবিনেট বেছে নেওয়ার প্রবণতা সত্যিই লক্ষ্য করার মত। যে সব ফার্নিচার দেয়ালের ভেতরে ফিটিং করাতে হবে তার জন্য প্রস্তুতিটা আপনাকে কনস্ট্রাকশনের সময়ই নিতে হবে। যখন বাড়ি সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে, শুধু রঙ করার বাকি তখন ফার্নিচারের মিস্ত্রী এনে এই ফার্নিচার গুলো সেট আপ করাতে হবে। খেয়াল রাখবেন ঘরের রঙ করার আগে এই সেটআপ শেষ করতে হবে নয়তবা রঙ আর দেয়ালের ক্ষতি হতে পারে। কেবিনেট জিনিসটা বরাবরই আভিজাত্য এবং স্টাইলের প্রতীক। অনেকেই মনে করেন একটা স্টাইলিশ ঘর মানেই সেখানে কেবিনেট থাকবে।এটার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে দেয়ালের ভেতরে থাকে বলে বেশি একটা জায়গা নেয় না। আর হোম ডেকোরে এর প্রভাব বেশ গভীর। সবার নজর কাড়তে বাধ্য।
ব্রিক ওয়াল, প্যাটার্ন বা টেক্সচার ওয়াল
ঘরের দেয়াল সাজাতে হলে, ব্রিক ওয়াল বা প্যাট্যার্ন যেটাই করুন না কেন আপনার একজন দক্ষ কারিগরের প্রয়োজন হবে। কেননা এই কাজগুলো বেশ কঠিন। সঠিক ভাবে করা না হলে ঘরের চেহারা বিগড়ে যেতে পারে। তাই কনস্ট্রাকশনের সময় ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন সেটআপ দিতে হবে। দেয়ালের কাজে যখন মিস্ত্রীরা হাত দিবেন তখনই আপনাকে তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে আপনি চাচ্ছেন কী! ব্রিক ওয়াল করবেন নাকি প্যাট্যার্ন করবেন! অনেকেই আছেন যারা প্লেইন বা সমান দেয়াল পছন্দ করেন না। একটু উঁচু নিচু প্যাট্যার্ন থাকলে খুশি হন তাদের জন্য তো কনস্ট্রাকশনের সময় ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন সেটআপ হিসেবে দেয়ালে কি হবে এটা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দেওয়া বেশ জরুরী। নয়তবা একবার ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে, পুনরায় এই দেয়ালের কাজ করানো যেমন সময়ের ব্যাপার তেমনি খরচেরও। এছাড়া দেয়ালে টেক্সচার দিলে সেটাও আপনাকে কনস্ট্রাকশনের সময়ই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সিলিং ও ঝাড়বাতি
হোম ডেকোরে নানন্দিক সিলিং এক চমৎকার উপায়। খুব সহজে ঘরের ভেতরটা ফুটিয়ে তুলতে সিলিং এর কোন বিকল্প নেই। ঘরের সিলিং নান্দনিক করতে নকশার ডেপথ তৈরি করার চেয়েও যদি আরও বেশি কিছু করতে চান, তবে আপনি চাইলে সিলিং এর মেকওভার করতে পারেন। সিলিং এর চারিদিকে বর্ডার যোগ আঁকতে পারেন। এম্বিয়েন্ট লাইটিং করতে পারেন। এটা সবসময় সিলিং কে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। এখন একেক ঘরের সিলিং উচ্চতা একেক রকম বেছে নিচ্ছে অনেকে। সেই উচ্চতা কমাতে ব্যবহার করছেন ফলস সিলিং। ঘরের মাঝখানটায় সিলিং একটু নিচের দিকে আনা থাকে। এতে ঘরের ভেতর একটা ডেপথ তৈরি হয়। দেখতেও অন্যরকম লাগে। কিন্তু এটা আপনি চাইলেই করতে পারছে না। আপনার আর্কিটেক্টের সাথে কথা বলে, কনস্ট্রাকশনের সময় এই ফলস সিলিং লাগিয়ে নিতে হবে অথবা তৈরি করতে হবে। সুতরাং এটা আপনাকে কনস্ট্রাকশনের সময়ই করতে নিতে হবে। বাড়ির কাজ সম্পন্ন হবার পর এটা করা কোন ভাবেই সম্ভব না। অনেকেই ঘরের আভিজাত্যে ঝাড়বাতি বা শ্যান্ডেলিয়ার বেশ পছন্দ করেন। ঝাড়বাতি আপনি যেকোন সময় আর অবস্থাতে ব্যবহার করতে পারবেন কিন্তু, যদি ফলস সিলিং ব্যবহার করতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই কনস্ট্রাকশনের সময় ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন সেটআপ দিতে হবে। নয়তবা ঝাড়বাতি লাগানো যাবে না। বেশ কিছু ঝাড়বাতি রয়েছে যেগুলো ফলস সিলিং এ ব্যবহার করতে বেশ সুন্দর মানিয়ে যায়। এক্ষেত্রে খেয়াল করতে হবে।
ঘরের মেঝে
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ডেকোর আইডিয়া। কিছু না করেও অনেক কিছু করে ফেলা যায় ঘরের জন্য আদর্শ মেঝে বাছাই করে। ঘরের সাজে টাইলসের প্রভাব অনেক। ঘরের ডেকোর যতই রুচিশীল করুন না কেন, যদি ঘরের মেঝে মোজাইক না টাইলস সেটা সঠিকভাবে বেছে নিতে না পারেন তাহলে সকল পরিশ্রমই পণ্ড। যদিও বেশ আগে থেকেই ঘরের মেঝে হিসেবে মোজাইকের রাজত্ব ছিল কিন্তু এখন সবাই বেছে নিচ্ছে টাইলস। অনেকে আবার পছন্দ করছে উডেন ফ্লোর। কিন্তু যে মেঝেই বেছে নিন না কেন, সেটার জন্য অবশ্যই প্রয়োজন পূর্ব প্রস্তুতি। আর সেটা কনস্ট্রাকশনের সময় ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন সেটআপ হিসেবে নিতে হবে। বাড়ির কাজের সময়ই এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন ঘরে কেমন মেঝে হবে। সে অনুযায়ী ফ্লোরিং করতে হবে।
হোম ডেকোরে নতুন কিছু করার অনেক সুযোগ রয়েছে কনস্ট্রাকশনের সময় থেকে কাজ শেষ হওয়ার পর অব্দি। বিভিন্ন কিছু নিয়ে খেলার একটা সুযোগ থাকে।
1 Comment
এটা ঠিক যে হোম ডেকোরেশন করতে হলে আগে থেকেই প্রিপারেশন নিয়ে রাখা ভালো। কিন্তু যারা আগে থেকেই প্রিপারেশন নেন নাই, তাদের ও চিন্তা করার কিছু নেই, নতুন পুরাতন সব ধরনের বাড়ি ডেকোরেশন করা সম্ভব। আগামী বছর আমি আমার একটা কম্পানির খুলবো হোম রেনোভেশন এর উপর, electric wiring, air-conditioning. Piping. Ceiling. Patiton. & Interior home design. স্বপ্ন চিন্তা আপনার, আর বাস্তবায়ন করার দ্ধায়িত্ব আমাদের, ইনশাআল্লাহ দেখা হবে, সবাই দোয়া করবেন