গতবছর থেকে আমাদের জীবন চলছে নতুন নিয়মে! বাইরে থেকে আমরা ঘরে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি খুঁজে পাচ্ছি। দিনের প্রায় পুরোটাই থাকতে হয়েছে ঘরে, আর এই সময়টাতে আমাদের ছাদ, বারান্দা বা বাড়ির পেছনের খোলা জায়গাটা বেশ সাহায্য করেছে। হাঁটা চলা করার জন্যও একটা খোলা জায়গা কিন্তু লাগে। সেখানে একাকী বসে কিছুক্ষণ সময় কাটানো যেন আমাদের জন্য শক্তি সঞ্চারের এক অনন্য উপায়। আর এই জায়গাগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে সেখানে ব্যবহৃত কিছু ফার্নিচার। ছাদে একাকী সময় কাটানো অনেকেরই পছন্দের একটি কাজ। ছাদে রাখা বেঞ্ছে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা গল্পের বই পড়া। বাড়ির অন্যতম রিলাক্সিং কর্নার বারান্দায় রাখা চেয়ারে, বসে বৃষ্টি দেখা কিংবা বাসার বাইরের জায়গায় বসে আকাশ দেখা। কি অদ্ভুত সুন্দর এই সময়গুলো। এমন সময়গুলো যেন হারিয়ে না যায় সেজন্য, ছাদ, বারান্দা ও আউটডোরের যেমন যত্ন প্রয়োজন তেমন এই জায়গাগুলোতে রাখা ফার্নিচারেরও প্রয়োজন যত্ন আত্তি। ঘরের জন্য আসবাব কেনার সিদ্ধান্ত যেমন সময়সাপেক্ষ্য একটি বিষয় তেমন আউটডোর ফার্নিচার কেনার আগেও আমাদের অনেক কিছু জানতে হবে। এছাড়া, যারা ভাবছেন এমন একটি স্পেস তৈরি করে নিব বাড়ির পেছনে পরে থাকা জায়গায় তাদের জন্য আউটডোর ফার্নিচার বাছাই ও ক্রয় পূর্বে করার এই টিপসগুলো জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। আর দেরি না করে শুরু করা যাক। কেবল আউটডোর ফার্নিচার সম্বন্ধে নয় আমরা আউটডোর ফার্নিচারের জন্য ব্যবহৃত কাভার সম্বন্ধেই জানবো। কেননা, এই ফার্নিচারগুলো পুরোটা সময়ই ঘরের বাইরে থাকবে একদম এক্সপোসড অবস্থায় প্রাকৃতিক পরিবেশে তাই কেমন কাভার বাছাই করতে হবে সে সম্বন্ধেও জানা জরুরী।
কাভার বাছাইয়ের পূর্বে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরী

ফার্নিচারের জন্য কাভার নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরিমাপ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ফার্নিচারের সাথে হুবহু পরিমাপের কাভারের ফলে তা বৃষ্টির পানি বা অন্যান্য জীবাণু থেকে সুরক্ষা প্রদান করবে। তাই কাভার তৈরি বা ক্রয়ের সময় এই বিষয়গুলো খেয়াল করতে হবে। কাভার বাছাইয়ের সময় রঙ বা নকশার থেকেও আপনাকে খেয়াল করতে হবে যেন কাভারটি পানিরোধী হয়ে থাকে। কেননা, দিনের পুরোটা সময়ে এই ফার্নিচারগুলো বাসার বাইরে থাকবে তাই ফার্নিচারের গায়ে মরিচা যেন না লাগে সেজন্য ওয়াটার রেসিস্টেন্স কাভার বাছাই করতে হবে। আর এই কাভারগুলো আপনার আসবাবকে শুকিয়ে রাখবে এবং ছত্রাকের বৃদ্ধি রোধ করবে। এছাড়া, কাভারগুলো যেন বাতাসে বা রোদে দ্রুত শুকিয়ে যায় সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন উপাদানে তৈরি এই ফার্নিচার গুলোর যত্নও কিন্তু আলাদা। চলুন জানা যাক কী কী ধরণের আউটডোর ফার্নিচার রয়েছে।
প্লাস্টিক

বেশীরভাগ আউটডোরে এই ধরণের ফার্নিচারকেই বেশি দেখা যায়। সহজে এগুলো আনা নেওয়া করা যায়। অনেকে এই চেয়ারগুলোকে বাসার ভিতরেও ব্যবহার করে থাকে এবং প্রয়োজনে বাসার বাইরেও নিয়ে যায়। ওজন অনেক কম দেখে বহন করাও বেশ সহজ। আর এগুলো পরিষ্কার করাও বেশ সহজ। অল-পার্পাস ক্লিনার ব্যবহার করে এগুলো পরিষ্কার করা সম্ভব। এবং পরিষ্কারের সময় অবশ্যই পরিষ্কারের কাপড়টির দিকে নজর দিন। পাতলা মসৃণ কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করলে ফার্নিচায়ের গায়ে আঁচড় বা দাগ বসবে না। প্লাস্টিকের ফার্নিচারকে নিঃসন্দেহে বাসা বদলে সহায়ক ফার্নিচার বলা যায়। বহন করা যায় বেশ সহজে।
লোহা

প্লাস্টিকের পরে যদি কোন ম্যাটেরিয়ালের ফার্নিচারের কথা বলা যায় তা হচ্ছে রড আয়রন। আউটডোর ফার্নিচার হিসেবে এর জুড়ি নেই। দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং টেকসই। যেকোন পরিবেশে এগুলো মানিয়ে যায়। সহজে নষ্ট হয়ে যায় না। এমনকি প্রাকৃতিকভাবে দেখতে এতই সুন্দর যে কাভার ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। এছাড়া, পরিষ্কার করতেও কোন ঝামেলা পোহাতে হয় না। সাদা ভিনেগার ব্যবহার করে পাতলা নরম কাপড় দিয়ে মুছে নিলেই হয়। খুব বেশি ক্ষার আছে, এমন পরিষ্কারক ব্যবহার না করাই ভালো।
অ্যালুমিনিয়াম

বারান্দা বা ছাদে অ্যালুমিনিয়ামের আসবাব বেশ আকর্ষণীয়। বিশেষ করে বেঞ্চ, টেবিল ও চেয়ারের ক্ষেত্রে এই উপাদানটির ব্যবহার বেশি। অনেকেই ছাদ বাগান করতে ভীষণ পছন্দ করেন সেখানে দীর্ঘ সময়ে কাটাতে হয় অ্যালুমিনিয়ামের ফার্নিচারগুলো ছাদবাগানে ব্যবহারের জন্য বেশ জনপ্রিয়। ফার্নিচারে চকচকে ভাব ধরে রাখতে গাড়ি ধোয়ার জন্য যে ধরনের জেল ব্যবহার করা হয়, তা দিয়েই অ্যালুমিনিয়াম ফার্নিচার পরিষ্কার করা উচিত।
প্রাকৃতিক উপাদানের ফার্নিচার

প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে পড়ে বেত, বাঁশ ও কাঠ। যদিও বাংলাদেশ কাঠের আসবাবের জনপ্রিয়তা বেশি। কেবল আসবাবেই নয় বরং সর্বক্ষেত্রেই। প্রাকৃতিক উপাদানের আসবাবগুলো সূর্যের আলোতে সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। তাপে রঙ যেমন হালকা হয়ে যায় তেমনি দ্রুত নষ্ট হয়েও যায়। তাই, যখন ব্যবহার করা হবে না তখন কাভার দিয়ে ছায়া যুক্ত জায়গায় রাখাই ভালো।
কাঠের ফার্নিচার

ঘরের সাজে আভিজাত্য ফুটিয়ে তোলে এই বাহারি নকশার নানা কাঠের আসবাব। মূল্য বেশি হলেও টেকসই বেশি বলে অনেকেই কাঠের আসবাব কিনতে ঝুঁকছেন। কাঠের আসবাব একই সাথে রুচিসম্মত এবং নকশায় পরিপূর্ণ। কাঠের আসবাব দেখতে নান্দনিক হলেও এর যত্ন নিতে হয় বেশি। ওজনে ভারী হয় দেখে ঘন ঘন সরানো সম্ভব নয়। কিন্তু, নান্দনিকতার দিক থেকে অনেকেই কাঠকে বেছে নেন আউটডোর ফার্নিচার হিসেবে। নিয়মিত যত্ন নিলে এই আসবাবগুলো বর্ধিত সময়ের চেয়ে আরও বেশি সময় ধরে টিকে থাকবে। প্রাথমিকভাবে সাবান ও পানি দিয়ে কাঠের আসবাব পরিষ্কার করা উচিত। এ ছাড়া কাঠের আসবাবের জন্য কিছু তরল উপাদানও পাওয়া যায়, যা কাপড়ের সাহায্যে পরিষ্কারে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও, কাঠের আসবাবকে আরও যত্নসহাকারে পরিষ্কার করার জন্য এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। এখানে বিস্তারিত ভাবে রয়েছে কীভাবে কাঠের আসবাবের যত্ন নেবেন। এছাড়াও বর্ষাকাল কাঠের আসবাবের যত্ন ভিন্ন, তা জানতে ক্লিক করুন এই লিংকে।
এই ছিল আউটডোর ফার্নিচার নিয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেল। কেমন লেগেছে জানাতে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আর আপনার হোম ইন্টেরিয়রটা স্টাইলিশ করতে চাচ্ছেন? বিপ্রপার্টি হতে পারে আপনার ইন্টেরিয়র গাইডেন্স! সেটা কীভাবে জানতে যোগাযোগ করুন এখনই!
কলঃ ০৯৬১২১১০০১১
ইমেইলঃ interior@bproperty.com
ভিজিট করুন https://www.bproperty.com/en/interior/